প্রতীকী ছবি

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী—যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে; তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি এই মহৎ ইবাদত পালন করে না, তাকে হাদিসে নিন্দা করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার কোরবানির সামর্থ্য রয়েছে, কিন্তু কোরবানি করে না—সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৩৫১৯; আত্তারগিব ওয়াত্তারহিব: ২/১৫৫)

তবে কেউ কোরবানির পশু কেনার পর যদি সেই পশু চুরি হয়ে যায়, মারা যায় অথবা হারিয়ে যায়, তাহলে তাকে আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। কারণ, সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানির দিনগুলোতে কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের জন্য সালাত আদায় করুন এবং কোরবানি করুন’। (সুরা কাউসার, আয়াত, ২)

আর পশু হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি যদি গরিব হয়- যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব ছিলো না, তবুও তিনি এই মহৎ ইবাদতে অংশ গ্রহণের জন্য কোরবানির পশু কিনেছিলেন, তাহলে পশু হারিয়ে যাওয়ার পর তার জন্য নতুন করে আরেকটি পশু কিনে কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব নয়।

তামিম ইবনে হুয়াইয়িয আযাদী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার কোরবানীর পশু জবাই করার আগেই হারিয়ে গেলো। এ বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আমি ইবনে আব্বাস রা.-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বললেন, কোনো অসুবিধা নেই। (আল মুহাল্লা খ: ৭ পৃ: ৩৫৮ ইলাউস সুনান খ: ১৭ পৃ: ২৮০)

এ সম্পর্কে ফিকহের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ বাহরুর রায়েকে এসেছে, কোরবানির পশু যদি হারিয়ে যায়, তাহলে গরীব ব্যক্তির জন্য হারিয়ে যাওয়া পশুর পরিবর্তে আরেকটি পশু ক্রয় করা জরুরি নয়। তবে লোকটি যদি সম্পদশালী হয় তাহলে আরেকটি পশু ক্রয় করে কোরবানি করা ওয়াজিব। 

(আল বাহরুর রায়েক খ: ৯ পৃ: ৩২০ বাদায়েউস সানায়ে খ: ৪ পৃ: ১৯৯ ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া খ: ৫ পৃ: ২৯৪ ফাতওয়ায়ে শামী খ: ২ পৃ: ২৩৩ ফাতওয়ায়ে বাযযাজিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া খ: ৬ পৃ: ২৮৯ ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া খ: ১৭ পৃ: ৪১৩ আল ফাতওয়ান নাওয়াজিল পৃ: ৩৩৬ ফাতহুল কাদীর খ: ৯ পৃ: ৫৩০ আল জাওহারাতুন নায়্যিরাহ খ: ৩ পৃ: ৮১ হিদায়া খ: ৪ পৃ: ৪৩১)

এনটি