শবে বরাতে যেভাবে নামাজ পড়তে পারেন
শবে বরাতে যেভাবে নামাজ পড়তে পারেন; ছবি সংগৃহীত।
বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত রাত শবে বরাত। বহু হাদিসে শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। তবে জেনে রাখা উচিত, শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত ও আমল নেই।
বিভিন্ন হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে, এই রাতে রাসুল (সা.) বিশেষ পদ্ধতিতে কোনো ইবাদত করেননি। পাশাপাশি সাহাবায়ে কেরামকেও করার নির্দেশ দেননি। তাই শবে বরাতের জন্য কোনো ইবাদত নির্দিষ্ট করা ইসলামে জায়েজ নেই।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ কোনো নামাজ নেই, তবে...
আমাদের সমাজে শবে বরাতে নামাজের বিশেষ পদ্ধতির (নির্ধারিত সুরার মাধ্যমে) কথা প্রচলিত আছে। অথচ কোরআন-হাদিস ও ফিকহের কিতাবে এর কোনো ভিত্তি নেই। তাই শবে বরাতে ইসলাম-বহির্ভূত কোনো আমল করা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
তবে কেউ চাইলে ফজিলতপূর্ণ এই রাতে হাদিসে যেসব আমলের ব্যাপারে নির্দেশনা-ইঙ্গিত পাওয়া যায়, ব্যক্তিগত নফল ইবাদত হিসেবে তা করতে পারেন। নিম্নে এই রাতে রাসুল (সা.)-এর নামাজের ধরন উল্লেখ করা হলো—
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘ রাকাতে নামাজ পড়া
অধিক নফল নামাজ ও দীর্ঘ ইবাদত প্রসঙ্গে আম্মাজান আয়েশা (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন—
একবার রাসুল (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সিজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি জবাবে বললাম, না, হে আল্লাহর রাসুল, আপনার দীর্ঘ সিজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন! নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল ভালো জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থায়।
(শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৫৫৪)
এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে নফল নামাজে দীর্ঘ কিরাত পড়া এবং লম্বা সিজদা করা এ রাতের বিশেষ একটি আমল।
তাই আমাদের উচিত মনগড়া ইবাদত-আমল পরিহার করে যথাসম্ভব রাত জাগরণের মাধ্যমে বেশি বেশি নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাওবা-ইস্তিগফার, দোয়া-মুনাজাত ও জিকির-আজকারে সময় কাটানো।
আল্লাহ আমাদরে তাওফিক দান করুন।