তুরস্কের একটি মসজিদ। ছবি : সংগৃহীত

জান্নাত চিরসুখের আবাস। মুসলমানের স্থায়ী ঠিকানা। পরকালের পরিধি অনন্ত-অনিঃশেষ। পার্থিব জীবন নিতান্ত ক্ষণস্থায়ী। তাই স্বল্পসময়ে দীর্ঘ জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া মুমিনের কাজ। হাদিসে বলা হয়েছে- ‘বুদ্ধিমান তো ওই ব্যক্তি যে প্রবৃত্তিকে নিজের মতো করে পরিচালনা করে এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য আমল করে।’ (রিয়াদুস সালেহিন, হাদিস : ৬৬)

কোরআন-হাদিসের নির্দেশিত পথে নিজেকে পরিচালিত করা প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য। আমলের মাধ্যমে সহজেই জান্নাতের পথ সুগম ও মসৃণ করে তোলা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রচুর আমল রয়েছে; তবে আমরা পাঁচটি উল্লেখ করছি।

ফরজ নামাজ
ঈমান আনার পর প্রধান দায়িত্ব নামাজ। জান্নাতে যেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। কেননা, নামাজ জান্নাতের চাবিকাঠি

রবিআ ইবনে কাআব আসলামি (রা.) বলেন, 

‘এক রাতে আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। তার অজুর পানি এনে দিলাম। প্রয়োজনীয় কাজ করে দিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, আমার কাছে কী চাও তুমি? আমি বললাম, আপনার সঙ্গে জান্নাতে থাকতে চাই। তিনি বললেন, আর কিছু? আমি বললাম, শুধু এটিই চাই। তিনি বললেন, অধিক সিজদার মাধ্যমে তোমার জন্য আমাকে সাহায্য করো।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৯)

অর্থাৎ বেশি বেশি নামাজ পড়ো।

সরলতা
সহজ-সরলতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সরলপ্রাণ ব্যক্তি আল্লাহর খুবই প্রিয়। সরলতার বিনিময়ে তিনি জান্নাত দেবেন। উসমান ইবনে আফফান (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন,

‘আল্লাহ তাআলা সে ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যে সহজ-সরল। ক্রেতা হিসেবে হোক বা বিক্রেতা হিসেবে। বিচারক হিসেবে হোক বা বিচারপ্রার্থী হিসেবে।’

(নাসায়ি, হাদিস : ৪৬৯৬)

রোগীর সেবা-শুশ্রূষা

অসুস্থের সেবাশুশ্রূষা ও দেখাশোনা বড় সওয়াবের কাজ। জান্নাতে যাওয়ার সহজ আমলও বটে। সাউবান (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি রোগী দেখতে যায়- সে ফিরে আসা পর্যন্ত জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৮)

শিষ্টাচার
শিষ্টাচার ও সুন্দর আচরণ খুব বেশি পুণ্যময়। উবাদা ইবনে সামিত (রা.) রাসুল (সা.) থেকে করেন, 

‘তোমাদের পক্ষ থেকে ছয়টি বিষয়ের নিশ্চয়তা দাও, আমি তোমাদের জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব। সদা সত্য কথা বলো। প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করো। আমানত সময়মতো ফিরিয়ে দাও। লজ্জাস্থানের হেফাজত করো। দৃষ্টি সংযত রাখো। মন্দ থেকে হাতকে বিরত রাখো।’

(আহমাদ, হাদিস : ২২৮০৯)

আয়াতুল কুরসি পাঠ
আয়াতুল কুরসি পবিত্র কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত। রাসুল (সা.) ফরজ নামাজের পর এটি পড়তেন। আবু উমামা বাহিলি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়ে,  জান্নাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে মৃত্যু ছাড়া তার আর কোনো বাধা নেই।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৯৯২৮)