বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া চলমান করোনাভাইরাসসহ সব ধরনের মহামারি থেকে সুরক্ষা পেতে নানা ধরনের টিকা নেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এখনো করোনাভাইরাসের টিকা-কার্যক্রম চালু রয়েছে। অনেকে টিকা নিতে গিয়ে দ্বিধা-দ্বন্ধে পড়ছেন। তারা জানতে চান, রমজানে রোজা রেখে টিকা নিলে রোজা হবে কিনা।

জেনে রাখা জরুরি যে, টিকা বা ইনজেকশনের শরয়ি হুকুম বুঝতে হলে প্রথমে দুইটি বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। যথা- এক. ইনজেকশনের পদ্ধতিটি কি রোজায় কোনো ধরনের  প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে কিনা? দুই. কোন উদ্দেশ্যে ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে? আর উদ্দেশ্যের ভিন্নতার কারণে ইনজেকশনের হুকুমে কোনো ভিন্নতা আসবে কিনা?

টিকা ও ইনজেকশন নেওয়ার পদ্ধতি
বিজ্ঞ ডাক্তারদের বক্তব্য ও বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে একথাই প্রমাণিত যে, ইনজেকশন কয়েকভাবে দেওয়া হয়। এক. মাংসপেশিতে ইনজেকশন দেওয়া। দুই. চামড়া ও মাংসপেশির মাঝামাঝি ইনজেকশন দেওয়া। তিন. সরাসরি পেটে ইনজেকশন দেওয়া। চার. অধিকাংশ সময় রগের মাঝে দেওয়া হয়। এবার ভাবনার বিষয় হলো- এই চার ধরনের ইনজেকশনের বিধান কী?

ইনজেকশনের ব্যাপারে জমহুর ওলামাদের রায় এটাই যে, এর মাধ্যমে রোজা ভাঙে না। আর যেহেতু করোনাভাইরাসের টিকা মাংসপেশিতে নেওয়া হয় এবং তা সরাসরি খাদ্যনালি ও পাকস্থলিতে যায় না, সেহেতু রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা নিলে রোজা ভাঙবে না। এ মর্মে মুসলিম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আলেমরাও একই মত পোষণ করেছেন

তথ্যসূত্র : ইমদাদুল ফাতওয়া : ২/১৪৪-১৪৭; ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ : ৬/৪০-৪০৯; ফাতওয়া রহিমিয়া : ৭/২৫৭; আহসানুল ফাতওয়া : ৪/৪২২; কিফায়াতুল মুফতি : ৪/২৫৩; ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৫/১৭৩-১৭৯; ফাতওয়ায়ে হক্কানি : ৪/১৬২-১৬৩; আপকি মাসায়িল আওর উনকা হল : ৩/২১২; জাদিদ ফিকহি মাসায়িল : ১/১২২-১২৪; ফাতাওয়া মুফতি মাহমুদ : ৩/৪৮৮-৪৮৯; কিতাবুল ফাতওয়া : ৩/৩৯১-৩৯২; ফাতওয়া উসমানি : ২/১৮১-১৮৬; ইমদাদুল ফাতওয়া : ৩/১৩৩-১৩৪; খাইরুল ফাতওয়া : ৪/৭৪