প্রতীকী ছবি

২০২৪ সালে শবে বরাত, রমজান, শবে কদর ও ঈদের মতো ধর্মীয় বিধান পালন করতে হবে আগের মতোই ধারাবাহিক নিয়মে। সুস্থ-স্বাভাবিক, প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ধর্মীয় বিধান পালন করা জরুরি। আল্লাহ তায়ালা হালাল উপার্জন এবং ধর্মীয় বিধান দুটিই পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। কোনো একটি ধরে কোনোটি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেননি।

অর্থাৎ, শুধু ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থেকে হালাল উপার্জন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে বলেননি। একইসঙ্গে শুধু পার্থিব আয়-উর্পাজন নিয়ে ব্যস্ত থাকা কখনো ইসলাম সমর্থন করে না।

মানুষের পার্থিব জীবন ও বাস্তবতার প্রতি খেয়াল রেখে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,  

فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

 

‘অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে (পৃথিবীতে) ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা (জীবিকা উপার্জনে) সফলকাম হও।' (সূরা জুমআ, (৬২), আয়াত, ১০)

ইসলামে ইবাদত ও আনন্দ উদযাপনের বিধান

ইসলাম কখনো মানুষের স্বভাবজাত বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়নি। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে সুখ-শান্তিতে বসবাসের জন্য আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের কথা বলেছে। প্রতিদিন নামাজ আদায়, বছরে একবার রমজানে রোজা পালন, সামর্থ্যবানদের জন্য হজ পালন এবং জাকাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইবাদতের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তুলতে বছরের বিশেষ বিশেষ কিছু দিনে ইবাদতের আলাদা ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। যেমন, শবে কদর, শবে বরাত, আশুরার দিনে নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। 

রাসূল সা.-এর আনন্দ উদযাপন

আবার ইবাদতের পাশাপাশি আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় আনন্দ উদযাপনের কথাও বলা হয়েছে ইসলামে। উদযাপনের জন্য বছরে দুই ঈদ রাখা হয়েছে ইসলামে। ঈদের উৎসব এবং আনন্দ-উদযাপনের ব্যাপারে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, তখন তিনি দেখলেন সেখানে আগে থেকে বসবাস করা মানুষেরা বছরে দুইটি বিশেষ উৎসব পালন করছে (গান-বাজনা, ঢোল-তবলা বাজিয়ে)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উৎসব পালনের এই রীতি অপছন্দ করলেন এবং তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এই দুই দিনে তোমরা কিসের উৎসব পালন করো?

উত্তরে তারা বললো- আমরা জাহেলিয়াতের যুগে এই দুটি দিনে খেলাধুলা, আনন্দ ফুর্তি করতাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে এই দুইটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন, এর একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হলো, ঈদুল আজহা।’(আবু দাউদ, হাদিস, ১১৩৪) 

২০২৪ সালের শবে বরাত, রমজান, শবে কদর ও ঈদ কবে?

২০২৪ সালের শবে বরাত, রমজান, শবে কদর, ঈদ ও হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো কবে, কত তারিখে পালন করতে হবে জেনে রাখার সুবিধার জন্য এখানে সম্ভাব্য তারিখ তুলে ধরা হলো- 

>>শব-ই-বরাত-২৬ ফেব্রুয়ারি, (সোমবার)।
>>বিশ্ব ইজতেমা- ২-৪ ফেব্রুয়ারি ও ৯-১১ ফেব্রুয়ারি।

>>শব-ই-মেরাজ- ৯ ফেব্রুয়ারি।
>>রমজান -১১ মার্চ, (সোমবার,শাবান মাসের শেষে রমজানের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।)

>>জুমাতুল বিদা- ৫ এপ্রিল, (শুক্রবার)।
>>শব-ই-কদর- ৬ এপ্রিল, (শনিবার)।    

>.ঈদুল ফিতর- ১০ অথবা ১১ এপ্রিল, (বুধ-বৃহস্পতিবার, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।)।
>>ঈদুল আজহা- ১৬ অথবা ১৮ জুলাই, (রোববার-মঙ্গলবার, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।)।
>> হজ- চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ১৫ জুন থেকে শুরু হতে পারে।

>>আশুরা - ১৭ জুলাই, (বুধবার)।
>>ঈদে মিলাদুন্নবী-  ১৬ সেপ্টেম্বর, (সোমবার)।

রমজান, ঈদ, হজ, শবে বরাত, শবে কদর, শবে মেরাজ, আশুরার দিনগুলো মূলত চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। ইসলামি ক্যালেন্ডারের প্রত্যেক মাস শুরুর তারিখ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়। এখানে ক্যালেন্ডারে উল্লেখিত সরকারি ছুটির সম্ভাব্য তারিখের ভিত্তিতে রমজান, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ ইবাদতের দিনগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আরবি মাাসে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

এনটি