প্রতীকী ছবি

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে জাকাত। ঈমানের পর নামাজ ও তার পরই জাকাতের স্থান। কোরআন মজিদের ৩২ জায়গায় জাকাতের কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে ২৮ জায়গায় নামাজ ও জাকাতের কথা একত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

কোরআন মজিদে আল্লাহ তায়ালা তার অনুগত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেন, ‘আর তারা যা কিছু দান করে এভাবে দান করে যে, তাদের হৃদয় ভীতকম্পিত থাকে (একথা ভেবে) যে, তারা তাদের রবের নিকটে ফিরে যাবে।’ (সূরা মুমিনুন, (২৩), আয়াত, ৬০)

এক আয়াতে মুমিনদের সম্বোধন করে বলেন, ‘... এবং তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই ব্যয় করে থাক। যে ধনসম্পদ তোমরা ব্যয় কর তার পুরস্কার তোমাদেরকে পুরোপুরিভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।’ (সূরা বাকারা, (২), আয়াত, ২৭২)

কোরআন মাজিদের এই আয়াতগুলো থেকে প্রমাণিত  হয় যে, বিনয়, খোদাভীতি, ইখলাস-নিষ্ঠা ও উত্তম চরিত্র হলো— দান-সদকা আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার অভ্যন্তরীণ শর্ত। এসব বিষয়ে যত্নবান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সময়মতো জাকাত আদায় করে দেওয়া কর্তব্য। এবং তা আসল হকদারের হাতে তুলে দেওয়া জরুরি।

কেউ তার জাকাতের টাকা ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলিমদের দিতে চাইলে এ বিষয়ে ধর্মীয় বিধান জেনে রাখা জরুরি। ফিলিস্তিনি মজলুম মুসলিমদের জাকাতের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো- ফিলিস্তিনের জাকাত নেওয়ার যোগ্য মুসলমানদের জাকাতের টাকা বা সম্পদের মাধ্যমে সহায়তা করা যাবে।

(অর্থাৎ এমন গরিব ও প্রয়োজনগ্রস্থ ব্যক্তি যার মালিকানায় তার মৌলিক প্রয়োজন পূরণের মতো সম্পদ নেই। অর্থাৎ, সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমান সম্পদ নেই। একইসঙ্গে তার কাছে এই পরিমাণ সম্পদ নেই যা জাকাতের নিসাব পূর্ণ করে এবং সেই ব্যক্তি সাইয়েদ ও হাশেমি নয়।)

তবে ফিলিস্তিনিদের জাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে যাচাই করে এমন গ্রহণযোগ্য কোনো দাতব্য সংস্থাকে তা হস্তান্তর করতে হবে যারা সত্যি সত্যিই ফিলিস্তিনের মজলুম এবং জাকাতের হকদার মুসলমানদের কাছে তা পৌঁছাতে পারবে। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা জাকাতের খাত সম্পর্কে বলেছেন, 

 اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ 

সদকাহ হল ফকীর, মিসকীন ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারী ও যাদের মন জয় করা উদ্দেশ্য তাদের জন্য, দাসমুক্তি ও ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে (ব্যয়ের জন্য) আর মুসাফিরের জন্য। এটা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ। আর আল্লাহ হলেন সর্বজ্ঞ, মহাবিজ্ঞানী। (সূরা তওবা, (৯), আয়াত, ৬০)

(ফতোয়ায়ে দারুল ইফতা জামিয়া উলুমে ইসলামিয়া আল্লামা ইউসুফ বানুরী টাউন, ফতোয়া নম্বর, ১৪৪৫০৫১০১৮৯৭, ফতোয়ায়ে আলমগীরী, ১/১৮৯, ফতোয়ায়ে শামী, ২/৩৩৯)

এনটি