প্রতীকী ছবি

অজু করার সময় চারটি ফরজ কাজ রয়েছে। তিনটি ধৌত করা আর একটি মাসেহ করা। সেগুলো হলো— পূর্ণ মুখমণ্ডল বা চেহারা একবার ধৌত করা। উভয় হাত কনুইসহ একবার ধৌত করা।  মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা।

এর কোনো একটি শুকনো থাকলে অজু হবে না। নামাজ, কোরআন স্পর্শ করে তিলাওয়াতের জন্য অজু আবশ্যক। কারণ অজু হলো- নামাজের চাবি। আর নামাজ হলো- জান্নাতের চাবি। অজু ছাড়া নামাজ পড়লে, নামাজ আদায় হয় না। নামাজ আদায় ও কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু আবশ্যক।

এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর, এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও। এবং যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। (সূরা মায়েদা, (৬) আয়াত, ৫)

কোনো অসুস্থতা বা এ জাতীয় কারণে যদি অজুর অঙ্গ ধোয়া সম্ভব নয়, তাহলে কীভাবে অজু সম্পন্ন করবেন। এ বিষয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। যেমন একজন জানতে চেয়েছেন-

‘আমাদের এক আত্মীয়ের দুই চোখে অপারেশন হয়েছে। বেশ বড় ধরনের অপারেশন। সাত দিনের আগে ব্যান্ডেজ খোলা হবে না এবং খোলার পর এক মাস পর্যন্ত ডাক্তার চোখে পানি লাগাতে নিষেধ করেছে। এমন অবস্থায় তার অজুর বিধান কী?’

এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা বলেন, যতদিন ব্যান্ডেজ লাগানো থাকে, কিংবা চোখের অংশ ভেজাতে চিকিৎসক নিষেধ করে থাকেন ততদিন স্বাভাবিক নিয়মে অজু করে শুধু ব্যান্ডেজের ওপরে বা চোখের অংশে মাসাহ করবে (ভেজা হাতের পরশ বুলাবে)। আর চেহারার বাকি অংশ ধোয়া সম্ভব হলে ধুবে। 

তবে যদি চেহারার বাকি অংশ ধুতে গেলে চোখের ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকে এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার তা ধুতে নিষেধ করেন তাহলে পূর্ণ চেহারাই মাসাহ করবে। আর চোখের অংশ মাসাহ করা যদি ক্ষতিকর হয় তাহলে ওই অংশ মাসাহ না করলেও চলবে।

এক্ষেত্রে অজুর অন্যান্য অঙ্গ যেহেতু ধুতে সক্ষম তাই চেহারা ছাড়া অজুর বাকি কাজ যথানিয়মে করতে হবে এবং শুধু চেহারা মাসাহ করে নিতে হবে।

তবে মনে রাখতে হবে, চোখ বা চেহারা ধোয়া যাবে না- শুধু এ কারণে তায়াম্মুম করা জায়েয হবে না।

(আসসুনানুল কুবরা, বাইহাকী ১/২২৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৬৩; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৮১, ১০২)

এনটি