প্রতীকী ছবি

ইসলামে খাদ্য মজুদ করার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে মুনাফা লাভের আশায় মজুতদারি করা অভিশাপ বা গুনাহের কাজ। মূলত একদল মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী অবৈধভাবে মুনাফা লাভের আশায় এ ঘৃণিত কাজটি করে থাকে। হানাফি মাযহাবের মতে এটি মাকরুহে তাহিরমি আর অন্যান্য মাযহাবের মতে সম্পূর্ণরূপে হারাম।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজুদদারদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কেউ যদি মুসলমানদের থেকে নিজেদের খাদ্যশস্য আটকিয়ে রাখে (মজুতদারি করে), তবে আল্লাহ তায়ালা তার ওপর মহামারি ও দরিদ্রতা চাপিয়ে দেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ৫৫, ইবনে মাজাহ, হাদিস, ২২৩৮)

এ বিষয়ে হজরত মামার ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ফাজালা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘পাপাচারী ছাড়া অন্য কেউ মজুদদারি করে না’ (তিরমিজি)। 

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ৪০ রাত পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য মজুদ রাখে, আল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকে না।’ মজুদদার ও অধিক মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে হাদিসে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে এদের পাপী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পণ্যদ্রব্য মজুদ করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী।’ (মিশকাত)

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘মজুদদার খুবই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি, যদি জিনিসপত্রের দাম হ্রাস পায় তা হলে সে চিন্তিত হয়ে পড়ে আর যদি দাম বেড়ে যায় তা হলে আনন্দিত হয়।’ (মিশকাত)

এমনিভাবে দালালি বা মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে দ্রব্যের দাম বাড়ানোর জন্য হাদিসে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশ্যে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন’ (তাবরানি, ৮/২১০)। 

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসেবে উত্থিত হবে। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, নেকভাবে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত’ (তিরমিজি, হাদিস, ১২১০)

এনটি