মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও জামাতে নামাজ আদায় করলে— যদি মসজিদের আজান সেখানে শোনা যায়, তাহলে নতুন করে আজান দিতে হবে না। কারণ, মসজিদের আজানই সেখানের জন্য যথেষ্ট। তবে জামাতে নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব, না দিলে অসুবিধা নেই।

আতা (রহ.) বলেন, আমি আলী ইবনে হুসাইন (রা.)-এর সঙ্গে জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-এর দরবারে প্রবেশ করলাম। তখন নামাজের সময় হয়ে গেলে, তিনি আজান ইকামত দিয়ে নামাজ আদায় করলেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ, হাদিস : ২২৮৪) 

আলী (রা.) বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি নির্জন মরুভূমির দিকে যাত্রা করে এবং পথিমধ্যে নামাজের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে সে চাইলে আজান-ইকামত দিয়ে নামাজ পড়তে পারবে। আর চাইলে সে শুধুমাত্র ইকামত দিয়েও নামাজ পড়তে পারবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ, হাদিস : ২২৮৪)

মুনফারিদের (একাকী নামাজ আদায়কারী) জন্য আজান-ইকামত দিয়ে নামাজ পড়া উত্তম। যাতে করে তার নামাজটা জামাতের আদলে আদায় হয়। (হালবি কাবিরি : ৩৭২; বাদায়ে সানায়ে : ১/৩৭৭; মাবসুত : ১/১৩৩)

আরও পড়ুন : শিশুদের মসজিদে নেওয়া যাবে কী?

মুসাফির এবং ঘরে নামাজ আদায়কারী মুকিমের জন্য আজান ও ইকামত মুস্তাহাব। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫৩)

একাকী নামাজ আদায়কারীর জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব। (হিদায়া ১/৯২)

উকবা ইবনে আমির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি—

‘তোমার রব সে ব্যক্তির ওপর খুশি হন, যে পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে বকরি চরায় এবং নামাজের জন্য আজান দেয় ও নামাজ আদায় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার এই বান্দাকে দেখ! নামাজের জন্য সে আজান ও ইকামত দিচ্ছে। সে আমাকে ভয় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও জান্নাতে প্রবেশ করালাম।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২০৩)

ঘরে নামাজ আদায়কারী মুকিমের জন্য আজান-ইকামত ছেড়ে দেওয়া বা না দেওয়া মাকরুহ নয়। (হালবি কাবিরি : ৩৭২)

তবে মুসাফিরের জন্য আজান-ইকামত উভয়টিকে তরক করা মাকরুহ। তবে ঘরে একাকী নামাজ আদায়কারী মুকিম ব্যক্তির জন্য মাকরুহ হবে না। অবশ্য মুকিম এবং মুসাফির উভয় প্রকার ব্যক্তিদের জন্য আজান-ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব বা উত্তম। (কানজুদ দাকাইক, খণ্ড : ০১; পৃষ্ঠা : ২৬৫)