অমুসলিমের মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহ পড়া যাবে?
প্রতীকী ছবি
কারো মৃত্যুর সংবাদ শুনলে আমরা ইন্নালিল্লাহি ওয়া-ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়ি। যার অর্থ আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং তার কাছেই ফিরে যাবো। এই বার্তা বা বাক্যটি কি কোনো অমুসলিমের মৃত্যুতেও পড়া যাবে?
আলেমদের মতে, কোনো অমুসলিম মৃত্যু বরণ করলেও তার মৃত্যুতে ইন্নালিল্লাহি ওয়া-ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, এই বাক্যের অর্থ আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার দিকেই প্রত্যাবর্তন করব—এই বাক্য এবং এর মর্মার্থ সব মানুষের ক্ষেত্রে সত্য। সবাই আল্লাহর মালিকানাধীন এবং সবাই তার কাছেই ফিরে যাবে। তাই নিজের পরিচিত বা আত্মীয়-পরিজনের মধ্যে কেউ অমুসলিম থাকলে এবং মারা গেলে তার মৃত্যুতে এই বাক্যটি বলা যাবে।
বিজ্ঞাপন
তবে তার মাগফিরাত কামনার জন্য দোয়া করা জায়েজ নয়। কারণ সে অমুসলিম এবং আল্লাহর ওপর ঈমান না রেখে মারা গেছে। তাই তার জন্য দোয়া, মাগফিরাত কামনা বা সদকা করা বৈধ নয়। সূত্র : বিন বায ডট কম
অমুসলিম মা-বাবার জন্য মাগফিরাত কামনা করা যাবে?
বিজ্ঞাপন
কোনো নওমুসলিম ইসলাম গ্রহণের পর তার মা-বাবা ইসলাম গ্রহণ না করে মারা গেলে নওমুসলিম সন্তানের জন্য অমুসলিম মা-বাবার জন্য মাগফিরাত কামনার দোয়া করা জায়েজ নেই।
ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতে, ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক কোনো অমুসলিমের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা বৈধ নয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নবী ও অন্যান্য মুমিনদের জন্য জায়েজ নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, যদিও তারা আত্মীয়ই হোক না কেন, এ কথা প্রকাশ হবার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী।’ (সূরা তওবা, আয়াত: ১১৩)
কাজেই মা-বাবা যদি হিন্দু, খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মে থাকা অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা যাবে না।
উপরে উল্লেখিত সূরা তওবার আয়াতটির তাফসির সহিহ বুখারিতে এইভাবে বর্ণিত হয়েছে যে—
যখন নবীজি সা.-এর চাচা আবু তালেবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলো, তখন নবী সা. তার কাছে গেলেন। তার কাছে আবু জাহল ও আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়্যাহ বসেছিল। নবী সা. বললেন, ‘চাচাজান! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়ে নিন, যাতে আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য প্রমাণ পেশ করতে পারি।
আবু জাহল ও আব্দুল্লাহ বিন আবী উমাইয়্যাহ বলল, ‘হে আবু তালেব! (মৃত্যুর) সময় আব্দুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবে?’ (শেষে অমুসলিম অবস্থাতেই আবু তালেবের মৃত্যু হলো।)
নবী সা. বললেন, ‘যতক্ষণ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে নিষেধ না করা হবে, ততক্ষণ আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকব।’ তখন এই আয়াতটি অবতীর্ণ হলো। এখানে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। (সহিহ বুখারি)
এনটি