হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার (রা)-এর রেওয়ায়েতে রাসুল (সা) বলেন, সুরা ইয়াসীন কোরআনের হৃৎপিণ্ড। এ হাদিসে আরও আছে যে, যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসীন আল্লাহ ও পরকালের কল্যাণ লাভের নিয়তে পাঠ করে, তার মাগফিরাত হয়ে যায়। তোমরা তোমাদের মৃতদের উপর এ সুরা পাঠ কর। (রূহুল মাআনী, মাযহারী) 

 ইমাম গাযালী (রহ.) বলেন, সুরা ইয়াসীনকে কোরআনের হৃৎপিণ্ড বলার কারণ এই হতে পারে যে, এ সুরায় কিয়ামত ও হাশর-নশরের বিষয় বিশদ ব্যাখ্যা ও অলংকার সহকারে বর্ণিত হয়েছে। 

পরকাল বিশ্বাস ঈমানের এমন একটি মূলনীতি, যার উপর মানুষের সকল আমল ও আচরণের বিশুদ্ধতা নির্ভরশীল। পরকালভীতিই মানুষকে সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করে এবং অবৈধ বাসনা ও হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে। অতএব দেহের সুস্থতা যেমন অন্তরের সুস্থতার উপর নির্ভরশীল তেমনি ঈমানের সুস্থতা পরকাল চিন্তার উপর নির্ভরশীল। (রূহুল মাআনী ) 

এ সুরার নাম যেমন সুরা ইয়াসীন নামে প্রসিদ্ধ, তেমন এক হাদিসে এর নাম ’আযীমা’ ও বর্ণিত আছে। অপর এক হাদিসে বর্ণিত রয়েছে যে, তওরাতে এ সুরার নাম ’মুয়িম্মাহ্’ বলে উল্লিখিত আছে। 

অর্থাৎ এ সুরা তার পাঠকের জন্য ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ ও বরকত ব্যাপক করে দেয়। এ সুরার পাঠকের নাম ’শরীফ’ বর্ণিত আছে। 

আরও বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন এর সুপারিশ ‘রবীয়া’ গোত্র অপেক্ষা অধিকসংখ্যক লোকের জন্য কবুল হবে। কতক রেওয়ায়েতে এর নাম ‘মুদাফিয়াও’ বর্ণিত আছে। 

অর্থাৎ এ সুরা তার পাঠকদের থেকে বালা-মুসিবত দূর করে। কতক রেওয়ায়েতে এর নাম ‘কাযিয়া’-ও উল্লিখিত হয়েছে অর্থাৎ এ সুরা পাঠকের প্রয়োজন মিটায়।(রূহুল মাআনী ) 

হজরত আবু জর (রা) বর্ণনা করেন, মরণোন্মুখ ব্যক্তির কাছে সুরা ইয়াসীন পাঠ করলে তার মৃত্যু সহজ হয়।(মাযহারী) 

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রা.) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি অভাব-অনটনের সময় সুরা ইয়াসীন পাঠ করে তবে তার অভাব পূরণ হয়ে যায়। (মাযহারী ) 

ইয়াহইয়া ইবনে কাসীর বলেন, যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসীন পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে স্বস্তিতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমাকে এ বিষয়টি এমন এক ব্যক্তি বলেছেন, যিনি এর বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। (মাযহারী)

এনটি