প্রতীকী ছবি

কোরবানি আল্লাহর ইবাদত। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। আল্লাহর রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর প্রতিবছর কোরবানি করেছেন। এরপর থেকে তিনি কখনো কোরবানি করা থেকে বিরত থাকেননি। 

যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না তাদের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করেনি, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ৮২৭৩; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১২৩)

করোনার সময় কোরবানিতে সতর্কতা ও করণীয়

দেশে নতুন করে লকডাউন শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবও আবার মাথাছাড়া দিয়ে ওঠেছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে কোরবানির আনুসাঙ্গিক কাজগুলো সম্পন্ন করতে অনেকে হিমশিম খেতে পারেন বলে মনে করছেন।

সে হিসেবে পশু কেনার জন্য বাজারে যাওয়া, জবাই করা, প্রক্রিয়াকরণ ও গোশত বণ্টন ইত্যাদি করতে কিছু বেগ পেতে হতে পারে। পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোরবানি করা কষ্টকর হতে পারে। তবে এসব সত্ত্বেও আমরা নিম্নোক্ত পন্থা অবলম্বন করতে পারি। তাহলে আশা করা যায়, কোরবানি করা অনেকটা সহজ হয়ে আসবে।

এক. পশু কেনা ও বাজারে যাওয়া

করোনার কারণে মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষত অনেকের পশুর হাটে যেতে অনীহা রয়েছে। অন্যদিকে অনলাইন হাটগুলোতে পশু কেনাকাটার বিজ্ঞাপনও নজরে পড়ছে। আগ্রহ দেখা যাচ্ছে কিছু মানুষের। সে হিসেবে ক্রেতারা ঘরে বসেই অর্ডার দিয়ে কিনতে পারছেন।

গত বছর সরকারিভাবে অনলাইন পশুর হাট চালু হয়েছিল। জেলা-উপজেলা পর্যায়েও দেখা গিয়েছিল অনলাইন পশুর হাট। এ বছরও এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই এই পরিস্থিতিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোরবানির পশু ক্রয়ের যেহেতু সুযোগ রয়েছে; সুযোগটি কাজে লাগানো যেতে পারে।

দুই. পশু কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন

ইসলামের এ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পালনে একটি ছাগল কিংবা ভেড়া দিয়েও কোরবানি করা যায়। এ ক্ষেত্রে কোরবানির জন্য বাজেটের বাড়তি ব্যয়ে গরিব-অসহায় ও কর্মহীন মানুষের জন্য সহায়তামূলক কিছু কাজ করা যেতে পারে। তাদের পানাহার ও মানবিক প্রয়োজন পূরণ করাও যায়। এতে সদকার সওয়াব লাভ হবে।

আরও পড়ুন : কোরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব

ধরুন, কেউ গত এক লাখ টাকার গরু কোরবানি করেছিল। তারা চাইলে এ বছর সীমিত পরিসরে কিছুটা কম দামে গুরু কোরবানি দিতে পারে। তাহলে গরুর মূল্য ৫০ হাজার টাকা হলে বাকি ৫০ হাজার টাকা দান করতে পারবে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, কোরবানির টাকা দান করে দিলে কিংবা কোরবানির বিকল্প কিছু করলে কোরবানি আদায় হয় না। কারণ, কোরবানির স্বতন্ত্র্য ইবাদত।

তিন. ঈদুল আজহার ৩ দিনে ভাগ করে কোরবানি

ইসলাম কল্যাণ ও শান্তির ধর্ম। সবসময় ইসলাম মানুষের কল্যাণ বিবেচনা করে। তাই কোরবানির বিধান পালনের সুবিধার্থে ইসলামের দেওয়া সুযোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

জিলহজ মাসের ১০, ১১, ১২ এই তিন দিন কোরবানি আদায়ের সুযোগ রয়েছে। তাই সবাই ১০ তারিখে একত্রে ভিড় না করে প্রতিটি এলাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলে ভাগ করে নেওয়া যায়। এরপর পর্যায়ক্রমে ও সুবিধামতো ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে কোরবানি সম্পন্ন করা যায়।