ছবি : সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে বিগত বছর ও এই বছর সফলভাবে সীমিত পরিসরে পবিত্র হজ আয়োজন করছে সৌদি আরব। এবারও সীমিত পরিসরে হজ আয়োজনে সাফল্য পেয়ে সারাবিশ্বের মুসলিমদের জন্য ওমরাহ পালনের সুবিধা উন্মুক্ত করছে দেশটি। ফলে ১৪৪৩ হিজরি সনের ০১ মহররম অর্থাৎ আগামী ১০ আগস্ট থেকে ওমরাহ পালনেচ্ছুকরা দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন।

রোববার (২৫ জুলাই) এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে সৌদি আরব। দেশটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েপড়া করোনা মহামারির কারণে বিদেশিদের ওমরাহ পালনের অনুমতি দেয়নি দেশটি। এমনকি হজের সময়ও বাইরে থেকে কেউ গিয়ে হজ আদায়ের অনুমতি ছিল না। বরং সে দেশে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা নিবন্ধন করে পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৌদি আরবে থাকা ১৫০টি দেশের নাগরিকসহ এবারের হজে অংশ নেন ৬০ হাজার মুসল্লি।

এবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিলো মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। অবশ্য সৌদির নাগরিক ও বাসিন্দাদের জন্য রোববার থেকেই ওমরাহ পালনের অনুমতি দিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এর আগে পবিত্র হজের প্রস্তুতির জন্য জ্বিলহজ্জ মাসের প্রথম সপ্তাহে ওমরাহ পালন স্থগিত করা হয়।

তবে বাইরের দেশ থেকে ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে গমনেচ্ছুকদের জন্য কিছু শর্ত আরোপ করেছে দেশটি। কেবল ৯টি দেশ ছাড়া বিশ্বের সকল দেশ থেকেই সরাসরি ফ্লাইটে সৌদি আরবে প্রবেশ করা যাবে। শর্তগুলো হচ্ছে—

এক. এই ৯টি দেশ হচ্ছে- ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও লেবানন। এই দেশগুলো থেকে কোনো ওমরাহ পালনপ্রত্যাশী সৌদি আরবে প্রবেশ করতে চাইলে, তৃতীয় কোনো দেশে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

দুই. ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার টিকার উভয় ডোজ গ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে। টিকা হতে হবে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের। তবে যারা চীনের তৈরি টিকার উভয় ডোজ নিয়েছেন, ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে ঢুকতে হলে তাদেরকে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার বাড়তি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে হবে।

তিন. ১৮ বছর বা এর ঊর্ধ্ব বয়সীরাই কেবল ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন। এছাড়া সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে স্বীকৃত ওমরাহ এজেন্সির মাধ্যমেই কেবল সৌদি আরবে আসতে পারবেন মুসল্লিরা।

চার. ওমরাহ পালনের সময় মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ এবং নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

প্রসঙ্গত, বছরের যেকোনো সময় পবিত্র ওমরাহ পালন করা যায়। ২০১৯ সালে এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৌদি আরব গত বছরের মার্চ মাসে ওমরাহ পালন স্থগিত করে। পরবর্তীতে একই বছরের অক্টোবর মাসে সীমিত আকারে ওমরাহ পালনের অনুমতি দেয় দেশটি।