প্রতীকী ছবি

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আল্লাহ ফরজ করেছেন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজ মুমিনের জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফজরের নামাজ অন্য চার ওয়াক্তের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফজর নামাজ আদায়ে কোনো ধরনের অবহেলা ও উদাসীনতা উচিত নয়।

ফজর নামাজ আদায় করলে, আল্লাহ তাআলা অগণিত ও অসংখ্য সওয়াব দান করবেন। এছাড়াও অনেক ধরনের ফজিলত ও পুরস্কারের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। তাই ফজরের সওয়াব ও পুণ্য লাভে নির্দিষ্ট সময়ে জাগ্রত হওয়ার বিকল্প নেই। কী কী আমল বা কাজ করলে, ফজরের সময় সহজে ঘুম ভাঙবে এবং জেগে নামাজ আদায় করা যাবে; এসব নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

বিতরের নামাজের পর দোয়া

শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ আদায়ের অভ্যাস কারও কারও থাকে না। তাই বিতরের নামাজ আদায় না করে, ঘুমুতে যাওয়া উচিত নয়। আর বিতরের নামাজ আদায়ের পর আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করুন। যেন তিনি আপনাকে ঘুম থেকে জেগে উঠে ফজর আদায়ে সাহায্য করেন।

কোরআন তিলাওয়াত করে ঘুমানো

মহাগ্রন্থ আল-কোরআন তেলাওয়াত কত বড় ইবাদত বলার অপেক্ষা রাখে না। আর কোরআন তেলাওয়াত আপনার মনোযোগ ঠিক রাখবে। ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠতে সহযোগিতা করবে। মহানবী (সা.) ঘুমাতে যাওয়ার আগে সুরা সাজদাহ ও সুরা মুলক (৩২ ও ৬৭ নম্বর সুরা) পাঠ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন : ফজর নামাজের সুন্নত কেন গুরুত্বপূর্ণ

রাতে ঘুমানোর আগে ওজু করা

বারা ইবনে আজিব (রা.)-কে মহানবী (সা.) বলেছিলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন নামাজের ওজুর মতো ওজু করবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৮৮৪)

মহান আল্লাহকে চেনা ও ভয় করা

আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ত্ব সম্পর্কে জানা—  ফজরের নামাজের জন্য জেগে ওঠার প্রধান কৌশল। আপনি যদি জানেন, আপনি কার ইবাদত করছেন। আর আপনি এ-ও জানেন যে, প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তার ইবাদত করা— আপনার প্রতি তাঁর নির্দেশ। তাহলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই জেগে উঠবেন।

ফজরের সওয়াব ও নামাজের প্রতি আন্তরিকতা

ফজরের নামাজ আদায় করলে যে অসংখ্য পুরস্কার ও সওয়াব দেওয়া হবে, তা স্মরণ করুন। সে জানা না থাকলে, জেনে নিন। তাহলে দেখবেন, সওয়াবের প্রত্যাশা ও গুনাহমুক্তির কামনা আপনাকে মানসিকভাবে সতেজ করে তুলবে। আপনি এমনিতে জেগে উঠতে পারবেন।

আরও পড়ুন : ফজর-মাগরিবের পর যে দোয়া পাঠে গুনাহ মাফ

এছাড়াও নামাজের প্রতি আন্তরিক হওয়ার বিকল্প নেই। ফজরের নামাজের জন্য জেগে উঠার ব্যাপারে আন্তরিক হোন। আন্তরিকভাবে প্রতিজ্ঞা করুন যে, আমি ফজরের ওয়াক্তে জেগে নামাজ পড়ব-ই ইনশাআল্লাহ।

অন্যকে জাগিয়ে দিতে বলা

পরিবারের অন্য সদস্য কিংবা বন্ধুদের বলে রাখুন। যেন তারা আপনাকে ফজরের সময় জাগিয়ে দেয়। আর আপনি আগে জাগলে, তাদের জাগিয়ে দিন। পরস্পর আলোচনা করে ঠিক করে রাখুন। দেখবেন, আপনারা সহজেই ফজর আদায়ে উঠতে পারবেন।

দুপুরে খাওয়ার পর সামান্য ঘুম গুরুত্বপূর্ণ

আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর একটি সুন্নত হলো- দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পর সামান্য ঘুমানো। এটাকে আরবিতে ‘কায়লুলা’ বলা হয়। এই সামান্য বিশ্রামের ফলে অনেক উপকার হয়। আপনাকে উজ্জীবিত করে তোলার পাশাপাশি মস্তিস্ককে সতেজও করে তোলে। রাতের দীর্ঘ ঘুম থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে অলসতার ঘোর কেটে যাবে। ফজরে জেগে ওঠা সহজ হবে।