প্রতীকী ছবি

আমলের মাধ্যমে জীবন গড়ে ওঠে। আমল বিনে জীবন মরু বিয়াবানের মতো। অনেক মানুষ আছেন, ঈমানদার; কিন্তু আমল তেমন করেন না। কেউ কেউ আমল করার ক্ষেত্রে নানা অজুহাত খোঁজেন। অথচ ইসলাম নিতান্ত সহজ। কেউ চাইলে সহজে আমল করে সওয়াব লাভ করতে পারে, এমন অসংখ্য আমল রয়েছে।

পাঠকদের ‍সুবিধার্থে এখানে কিছু আমল উল্লেখ করা হলো। যেগুলোর মাধ্যমে সহজেই বিপুল সওয়াব লাভ করা যাবে। কাজে ফাঁকে কিংবা অবসরে। অথবা কাজ চলাকালীন দুই-এক মিনিটে করা যাবে, এমন আমলও আমরা উল্লেখ করেছি অন্য একটি লেখায়। পাঠক নিজের সুবিধা মতো বেছে নিতে পারবেন।

অজুর পর কলেমা শাহাদত পাঠ

উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’

এতে জান্নাতের আটটি দরজার যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৪১, হাদিস একাডেমি, পবিত্রতা অধ্যায়)

সুরা ইখলাস পাঠ করা

সুরা ইখলাস তিনবার পড়লে পুরো কোরআন খতমের সওয়াব পাওয়া যায়। (বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)

সুতরাং যত খুশি পড়ুন, চাইলেই প্রতিদিন শত শতবার কোরআন খতমের সওয়াব পেতে পারেন। ‍সুরা ইখলাস পাঠে বেশি সময় লাগেও না। ছোট সুরা, সওয়াবে ও প্রতিদানে অনেক বড়।

সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ

বাড়িতে সালাম দিয়ে প্রবেশ করুন। এতে মহান আল্লাহ নিজ জিম্মাদারিতে আপনাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (ইবনে হিব্বান-৪৯৯, সহিহ তারগিব-৩১৬)

প্রতি রাতে সুরা মুলক পাঠ

প্রতি রাতে সুরা মুলক (৬৭ নম্বর সুরা) পাঠ করুন। এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।

(সহিহ নাসাঈ, সহিহ তারগিব, হাকিম-৩৮৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ-১১৪০)

আরও পড়ুন : কম সময়ে বেশি সওয়াবের আমল

শ্রেষ্ঠ জিকির করা

সকালে ও বিকেলে ১০০ বার করে ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করুন। এতে মহান আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশি মর্যাদা দান করবেন। (আবু দাউদ তাহকিককৃত, হাদিস : ৫০৯১)

সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় ১০০ বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করুন। এতে কিয়ামতের দিন আপনার চেয়ে বেশি সওয়াব নিয়ে আর কেউ উপস্থিত হতে পারবে না। (সহিহ মুসলিম-৬৫৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

বাজারে গেলে এই দোয়া পড়ুন

উচ্চারণ : লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইউমীতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা য়্যামুত, বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাই-ইন কাদির।’

এই দোয়া পাঠ করলে ১০ লাখ পুণ্য হবে, ১০ লাখ পাপ মোচন হবে, ১০ লাখ মর্যাদা বৃদ্ধি হবে এবং জান্নাতে আপনার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করা হবে। (তিরমিজি তাহকিককৃত-৩৪২৮, ৩৪২৯ শাইখ আলবানি হাদিসটিকে হাসান সহিহ বলেছেন)

আরও পড়ুন : যে আমলে সারা রাত ইবাদতের সওয়াব

৪০ দিন তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ

জামাতে ইমামের প্রথম তাকবিরের সঙ্গে ৪০ দিন সালাত আদায় করুন। এতে আপনি নিশ্চিত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১)

হেঁটে জুমা পড়তে যাওয়া

জুমার দিন গোসল করে হেঁটে আগে আগেই মসজিদে গিয়ে ইমামের পাশাপাশি বসে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনলে বাড়ি থেকে হেঁটে আসার প্রতি কদমে এক বছর সারা রাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং এক বছর টানা সিয়াম পালন করার সওয়াব পাবেন। (তিরমিজি তাহকিককৃত-৪৯৬)

নারীদের জন্য আরও সহজ 

নারীরা চারটি কাজ করবেন— ১. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ২. রমজানের সিয়াম, ৩. লজ্জাস্থানের হেফাজত, ৪. স্বামীর আনুগত্য। এই চারটি আমলের বিনিময়ে জান্নাতের যেকোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান-৪১৬৩, মুসনাদে আহমাদ-১৬৬১)

ইশরাকের নামাজ আদায়

মসজিদে ফজরের সালাত আদায় করে বসে দোয়া জিকির পাঠ করুন এবং সূর্য উঠে গেলে দুই রাকাত ইশরাকের সালাত আদায় করুন। এতে আপনি প্রতিদিন নিশ্চিত কবুল একটি হজ ও একটি ওমরাহর সওয়াব পাবেন আর কবুল হজের সওয়াব জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। (তিরমিজি-৫৮৬, জুমুআর নামাজ অধ্যায়