প্রতীকী ছবি

সিঙ্গাপুরে মুসলিম নার্সদের হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং নার্সদের ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব যুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর এমনটা হতে যাচ্ছে। সে হিসেবে আগামী নভেম্বর থেকে মুসলিম নার্সরা ইউনিফর্ম হিসেবে হিজাব পরতে পারবেন।

সোমবার (৩০ আগস্ট) সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম টুডে অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

সিঙ্গাপুরের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালিতে বক্তব্য দিয়ে লি সিয়েন বলেন, আমি আশা করি— সিঙ্গাপুরের বহুজাতি এবং বহু-ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি ও দায়বদ্ধতা সমুন্নত করার প্রয়াসে এই সিদ্ধান্ত সঠিক চেতনার সঙ্গে সবাই গ্রহণ করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের জাতিগত এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি সুশৃঙ্খল রাখার জন্য একটি সতর্কতার সমন্বয় করছি। এই পদ্ধতিটি বহু বছর ধরে আমাদের জন্য ভালো কাজ করছে। এটি যা অর্জন করেছে, তা আমাদের উদযাপন করা উচিত— একটি সত্যিকারের বহুজাতি, বহু-ধর্মীয় জাতি, যেখানে প্রতিদিন অনেক হৃদয়-উষ্ণতাপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া ঘটে।

আরও পড়ুন : মার্কিন বিমানবাহিনীর ১ম হিজাবি অফিসার মায়সা

হিজাব নিয়ে ২০১৪ মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে আলোচনা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর এই সিদ্ধান্তে দেশটির মুসলিশ নার্সরা খুশি। সিয়েন আরও বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে কথা বলেছি, হৃদয় থেকে হৃদয়ে। তারা আমাকে ব্যাখ্যা করেছিল যে কেন ‘তুডুং’ [হিজাব] মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর তারা আশা করেছিল যে, সরকার অনুমতি দেবে।

আমি তাদের বলেছিলাম যে, আমি বুঝতে পেরেছি— তারা এই ব্যাপারে কতটা দৃঢ়তা অনুভব করেছে। কিন্তু আমি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আমাদের নীতির পেছনের কারণগুলো তখন তাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছি।

আরও পড়ুন : হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে প্রথম হিজাবধারী মুসলিম

সিঙ্গাপুর সরকার পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে নার্সদের হিজাব পরার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার মনে করছে, দেশটির নাগরিকরা এখন জাতিগত এবং ধর্মীয় পার্থক্যকে বেশি গ্রহণ করছে। এই প্রসঙ্গে তারা জানিয়েছে- আমরা লক্ষ্য করেছি যে, মোটামুটি জাতিগুলোর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া আরামদায়ক থাকে। আর অমুসলিমরা মুসলিম নারীদের ‘তুডুং’ পরতে দেখে বেশ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।

২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরের আবাসিক জনসংখ্যার প্রায় ১৫.০৬% মুসলমান। সিঙ্গাপুরে বসবাসরত সিংহভাগ মালয় সুন্নি মুসলমান। এছাড়াও সিঙ্গাপুরের ১৪% মুসলমান দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত। অন্যান্যদের মধ্যে চীনা, আরব ও ইউরেশীয় সম্প্রদায়ের মুসলিমরা রয়েছে।