প্রতীকী ছবি

আমাদের দেশে প্রায় মানুষের সঠিক বয়স নিয়ে কিছুটা এদিক-সেদিক অবস্থা রয়েছে। অনেক মানুষের জন্মতারিখ ও জন্মসনে তারতম্য রয়েছে। প্রায় প্রত্যেকেরই বার্থ সার্টিফিকেটে বয়স ১-২ বছর কমানো থাকে।

কিন্তু দেখা যায়, চাকরির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আবেদন করার জন্য বয়স নির্ধারণ করে দেয়। এখন জিজ্ঞাসা হলো- কোনো ব্যক্তির যদি আসল বয়স বেশি হয়— আর সার্টিফিকেটে কমানো থাকে, তাহলে কমানো বয়সের সার্টিফিকেট দিয়ে নেওয়া চাকরির ইনকাম কি হারাম হয়ে যাবে?

এর উত্তর হলো- শরিয়তের বিধান মোতাবেক সার্টিফিকেটে বয়স কমিয়ে লেখা জায়েয নেই। কারণ, এটা স্পষ্টত ধোঁকা ও ছলচাতুরির আশ্রয় গ্রহণ। আর ধোঁকা কিংবা ধোঁকা দেওয়া ইসলামে হারাম। 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২২৫; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২৩১৪৭;  সুনানে দারিমি, হাদিস : ২৫৮৩; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৯০৫)

আরও পড়ুন : বদনজর থেকে বাঁচার আমল

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলমানরা তাদের শর্তের ওপর থাকবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫৯৪; সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ২৮৯০; শুয়াবুল ঈমান, হাদিস : ৪০৩৯)

সুতরাং জেনে রাখা উচিত যে, ইচ্ছাকরে সার্টিফিকেটে বয়স কম লেখা জায়েজ নেই। হারাম। তবে যদি ঘটনাক্রমে দুই-এক বছর কম লেখা হয়ে যায় এবং সেটা বদলানো সম্ভব না হয়— তাহলে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবশ্যই দোষী সাব্যস্ত হবে না। তবে এই ধোঁকার মাধ্যমে বা বয়স কমিয়ে কেউ যদি চাকরি নেয়, তাহলে ওই চাকরি ও চাকরির মাধ্যমে আয় হারাম হবে না (বয়স কমানোর কাজটি হারাম)। কারণ, যিনি বেতন নিয়ে থাকেন— তিনি নির্ধারিত পরিশ্রমের বিনিময়ে-ই ইনকাম করেন।

আরেকটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি যে, চাকরি নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে যদি বয়স ত্রিশের কোটায় নির্ধারিত থাকে আর বাস্তবে বয়স বত্রিশ হয় (কিন্তু সার্টিফিকেট অনুযায়ী আপনার বয়স ত্রিশ হয়)— তাহলে এক্ষেত্রে উক্ত চাকরি গ্রহণ না করাই উত্তম। কেউ উক্ত চাকুরী গ্রহণ করে নিলে— উক্ত কাজ অনুচিত ও তাকওয়ার পরিপন্থী কাজ হবে। তবে এই জাতীয় ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটে বয়স কম থাকার কারণে আয়-উপার্জন হারাম হবে না।