প্রতীকী ছবি

মানুষ নানা পেশায় কাজ করে। কেউ দেশে আর কেউ বিদেশে। কেউ কল-কারখানায়, আর কেউ অফিস-আদালতে। কিংবা আরও যত পেশার যত কর্মসংস্থান আছে- সেখানে। কিন্তু কথা হলো- কাজ করতে গিয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে অজুর অঙ্গে যদি রং বা আঠা জাতীয় কিছু লেগে যায় এবং এরপর কেউ অজু করে, তাতে কি অজু হবে?

আরেকজন ভাই আমাদের কাছে প্রশ্ন পাঠিয়ে জানিয়েছেন-

আমি প্রবাসে রঙের কাজ করি। প্রতিদিন আমাকে রং গুলাতে হয় এবং কাজ করার সময় হাতে-পায়ে ও শরীরের অনেক জায়গায় রং লেগে যায়। বিশেষ করে নখের ভেতরে সব সময়ই রং লেগে থাকে। প্রতিদিন পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। আমি এই অবস্থায় অজু করে নামাজ পড়লে আমার নামাজ হবে?

জেনে রাখা আবশ্যক যে, অজুর মূল অঙ্গ চারটি; চেহারা, হাত, পা, মাথা। মাথা মাসেহ করা ফরজ। আর বাকি তিন অঙ্গ ধোয়া ফরজ। এ তিন অঙ্গের কোনো একটি স্থান শুকনো থাকলে অজু হবে না। কেননা, অজুর সময় সমস্ত অঙ্গে পানি পৌঁছানো ফরজ বিধায়— এমন কোনো বস্তু অজুর অঙ্গে থাকতে পারবে না, যেগুলো চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছতে প্রতিবন্ধক। যেমন- মোম, আঠা ইত্যাদি।

সুতরাং যদি রং এমন হয় যা ব্যবহারে আবরণ পড়ে যায়, যার কারণে অজুর অঙ্গে পানি পৌঁছায় না; তাহলে তার অজু হবে না। রঙের প্রলেপ— এমনকি তা একেবারে সামান্য হলেও- দূর করে তবেই অজু করতে হবে।

যদি রং এমন হয়, যা ব্যবহারে আবরণ পড়ে যায়; যার কারণে অজুর অঙ্গে পানি পৌঁছায় না, তাহলে অজু হবে না। রঙের প্রলেপ দূর করে— তবেই অজু করতে হবে। এতে একটু কষ্ট হবে, কিন্তু আপনার তা সাধ্যানুপাতে চেষ্টা করতে হবে। কেননা, রঙের মাঝে এক ধরনের প্রলেপ বা স্তর রয়েছে, পবিত্র হতে গেলে যেটি চামড়ায় পানি পৌঁছতে অন্তরায় সৃষ্টি করে। আর যেসব জিনিস চামড়ায় পানি পৌঁছতে বাধা দেয়, অজুকারীর জন্য তা দূর করে তবেই অজু করতে হবে।

কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে মুমিনরা, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও, স্বীয় মুখমডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করো এবং পদযুগল গিঁটসহ।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৬)

হাদিস শরিফে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) দেখলেন জনৈক ব্যক্তি অজু করেছে কিন্তু পায়ে তার নখ বরাবর একটি স্থান অধৌত রয়ে গিয়েছে। তখন তিনি তাকে বললেন, ‘তুমি ফিরে গিয়ে সুন্দরভাবে অজু করে আসো।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৯১)