মাগরিব নামাজের প্রতীকী ছবি

মাগরিবের নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্যতম। সন্ধ্যায় সূর্য পুরোপুরি ডুবে গেলে মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়। আর পশ্চিম আকাশে দিগন্তলালিমা শেষ হওয়া পর্যন্ত মাগরিবের নামাজ পড়া যায়। তবে সূর্যাস্তের পর বিলম্ব না করে মাগরিবের নামাজ আদায় করে নেওয়া মুস্তাহাব।

মাগরিব নামাজ আদায়ের সময়

সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘সূর্য পর্দার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা নবী (সা.)-এর ইমামতিতে মাগরিবের নামাজ আদায় করতাম।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬১)

অন্য এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মত ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে অথবা মূল অবস্থায় থাকবে, যতদিন তারা মাগরিবের নামাজ আদায়ে তারকা উজ্জ্বল হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব না করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮)

অর্থাৎ যথাসম্ভব সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গেই মাগরিবের নামাজে দাঁড়িয়ে যাওয়া, বিলম্ব করা অনুচিত।

ফজর-মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আপনি অধিকহারে আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন। আর সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৪১)

তাফসিরবিদরা বলেন, এই আয়াতে পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে নামাজ আদায় করা। এই আয়াতে ফজর ও মাগরিবের নামাজের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ এ দুই সময়ে প্রকৃতিতে বড় দুটো পরিবর্তন হয়। দিন ও রাতের পালাবদল ঘটে।

আরও পড়ুন : ২ ওয়াক্ত নামাজ কাজা হলে আগে যেটি পড়বেন

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল এবং সন্ধ্যায় নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায় এবং যতবার যায় আল্লাহ তায়ালা ততবারই তার জন্য জান্নাতের মধ্যে মেহমানদারির উপকরণ প্রস্তুত করেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬২২)

মাগরিবের নামাজের সুন্নতের ফজিলত

বর্ণিত আয়াত ও হাদিস থেকে সকাল-সন্ধ্যার ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলতের বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। এমনকি উল্লিখিত হাদিস থেকে এ-ও বোঝা যায়, মাগরিবের নামাজ অতি বরকতময়।

মাগরিবের ফরজ নামাজের পর সুন্নত নামাজের কথা হাদিসে বিদ্যমান রয়েছে। এমনকি এর ফজিলতও অপরিসীম। যে ব্যক্তি গুরুত্বের সঙ্গে মাগরিবের পরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৩৬২)

আওয়াবিনের নামাজের ফজিলত

মাগরিবের নামাজের পর আরেকটি ফজিলতময় নামাজের কথা হাদিসে বর্ণিত রয়েছে। সেই নামাজ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ৬ রাকাত পড়বে, তাকে ১২ বছর নফল ইবাদতের সওয়াব দান করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪৩৭)

পরিভাষায় যাকে আওয়াবিন নামাজ বলা হয়। আওয়াবিন সম্পর্কে দুটি ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। একটি হলো, মাগরিবের ফরজের পর সুন্নতসহ ৬ রাকাত নামাজ পড়লেই তা আওয়াবিন বলে গণ্য হবে। অন্য বর্ণনায় সুন্নতের পর ৬ রাকাতের কথা বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা যেকোনো বর্ণনার ওপর আমল করলেই তা আদায় হয়ে যাবে। আল্লাহ আমাদের নেক আমলগুলো কবুল করুন। আমিন।