প্রতীকী ছবি

নামাজ মুমিনের আবশ্যিক আদায়ের ইবাদত। আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কের সবচেয়ে বড় উপায় ও মাধ্য হলো- নামাজ। তাই নামাজ আদায় করতে হয় সব নিয়ম-বিধি পালন করে। নামাজ আদায়ে কখনো অবহেলা করা যায় না।

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য অনেক শর্ত রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কবজি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফতোওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১০৬)

ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তাহলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় নামাজ নষ্ট হবে না। যদি একাধিক জায়গায় সামান্য করে খোলা থাকে, তাহলে এর সমষ্টি ছোট একটি অঙ্গের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ হলেও নামাজ হবে না। (রাদ্দুল মুহতার : ১/৩৭৯, তাবয়িনুল হাকায়েক : ১/৯৭)

আরও পড়ুন : একসঙ্গে কয়েকটি আজান শুনলে কোনটার জবাব দেবেন?

নারীদের চুলও সতরের অন্তর্ভুক্ত, একটি চুলের এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে গেলেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। (তাবয়িনুল হাকায়িক : ১/৯৭)

অনুরূপ এত পাতলা পোশাক, যাতে বাইরে থেকে ভেতরের অঙ্গগুলোর রং দেখা যায় তা দিয়েও নামাজ শুদ্ধ হবে না। (রাদ্দুল মুহতার : ১/৩৮১)

জীবজন্তুর স্পষ্ট ছবিবিশিষ্ট কাপড়ে নামাজ পড়া মাকরুহ। (হিদায়া : ১/১২২)

অনেক পুরুষ নামাজের আগে তাদের টাখনুর কাপড় ওপরে উঠিয়ে নেন, এটি অত্যন্ত জরুরি বিষয়। একটি হাদিসে এসেছে, ‘টাখনুর নিচের কাপড় পরিধানকারীর নামাজ কবুল হয় না।’ তবে তা শুধু নামাজের সময়ের আমল নয়, যদিও নামাজের সময় এর গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। বরং পুরুষের লুঙ্গি-পায়জামা ইত্যাদি নামাজের ভেতরে-বাইরে সর্বদা টাখনুর ওপর কাপড় পরিধান অপরিহার্য। হাদিস শরিফে এর প্রতি ভীষণ ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৩৮)

কেউ কেউ প্যান্ট এত নিচে পরিধান করে যে সতরের অংশবিশেষ খোলে যায়, এতে নিজের নামাজের তো ক্ষতি হচ্ছেই, অন্যদেরও অসুবিধা হয়।