জাহানারার গুরুতর অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত বিসিবির
দিন কয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলে নিজের বঞ্চনার কথা বলেছিলেন পেসার জাহানারা আলম। এবার যৌন হেনস্তার মতো গুরুতর অভিযোগ তুললেন বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করা টাইগ্রেস এই পেসার।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত প্রায় পৌনে ১২টার সময় দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সাবেক বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের এক সদস্যের মাধ্যমে গণমাধ্যমে উত্থাপিত কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় বিসিবি অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিটি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে।
বিসিবি সর্বদা তার খেলোয়াড় ও কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও পেশাদার পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। বোর্ড এ ধরনের বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিসিবি সকল পক্ষকে, বিশেষ করে গণমাধ্যমকে, অনুমাননির্ভর মন্তব্য বা প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছে, যাতে তদন্ত প্রক্রিয়া কোনোভাবে প্রভাবিত না হয়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন পেসার জাহানারা আলম। বিসিবি অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে তার অভিযোগ আমলে না নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল।
এরপর আজ আরেকটি সাক্ষাৎকারে আরো বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ তুললেন জাহানারা। ক্লাব ক্রিকেট খেলতে গত কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন তিনি। সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, প্রয়াত নারী দলের ইনচার্জ তৌহিদ মাহমুদ, ম্যানেজার ফাইয়াজ, আরেক কর্মকর্তা বাবু, কোচ ইমন, ক্রিকেটার জ্যোতি, পিংকি, নাহিদা, রিতুমনি রয়েছে তার অভিযুক্তের তালিকায়। যার মধ্যে মঞ্জু এবং তৌহিদকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন জাহানারা।
তিনি বলেন, ‘উনি (মঞ্জুরুল ইসলাম) একদিন আমার কাছে আসলেন, আমার কাঁধে হাত রেখে বলছিলেন, তোর পিরিয়ডের কতদিন চলছে। পিরিয়ড শেষ হলে বলিস, আমার দিকটাও তো দেখতে হবে। পিরিয়ড শেষ হলে, যখন ডাকবো চলে আসিস।’ মঞ্জুকে নিয়ে অন্য এক অভিযোগে জাহানারা বলেন, ‘বিশ্বকাপের কিছু ম্যাচে যখন আমরা লাইনে হ্যান্ডশেক করি, তখন তিনি (মঞ্জুরুল) হ্যান্ডশেক না করে জড়িয়ে ধরতেন।’
বিসিবির ক্রিকেটার কোচ-স্টাফদের নিয়ে এমন গুরুতর অভিযোগ কীভাবে দেখছে বিসিবি- এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় শীর্ষ এক বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে। আজ সন্ধ্যার পর ঢাকা পোস্টকে সেই পরিচালক বলেন, ‘এখন যেভাবে আসলে অভিযোগগুলো আসছে। অনেকের বিরুদ্ধে, এগুলো নিয়ে অবশ্যই আলোচনার বিষয় রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা অবশ্যই বোর্ডে তোলা হবে এবং এটা আমার একার পর্যায়ে নাই এখন। এটা বড় পর্যায়ে চলে গেছে। অলরেডি সভাপতিকে জানিয়েছি, আরো যারা আছে সবাইকে জানিয়েছি। অবশ্যই এটা নিয়ে আমরা জানার চেষ্টা করব। আসলে ব্যাপারটা কী, এটা আমরা খতিয়ে দেখব। এতগুলো মানুষকে নিয়ে বলা হচ্ছে, সুতরাং বিষয়গুলো বিসিবি খতিয়ে দেখবে।’
এফআই/এমএন