দুই গেমসে অলিম্পিকে পদকজয়ীদের ৩২ লাখ টাকা পুরস্কার
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দুটি গেমসে অংশগ্রহণ করেছে। বাহরাইনে ২২-৩১ অক্টোবর ইয়ুথ এশিয়ান গেমসে কাবাডি পুরুষ ও নারী দল ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। এরপরই ৭ থেকে ২১ নভেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস মিশ্র বিভাগে রৌপ্য, ভারত্তোলক ইকরা তিনটি ব্রোঞ্জ ও উশু খেলোয়াড় শিখা আরেকটি ব্রোঞ্জ পান। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পদকজয়ীদের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করেছে।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, এনএসসি, বিসিবি কিংবা বাফুফের আর্থিক পুরস্কার প্রদানের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। একমাত্র বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের এই আর্থিক পুরস্কার কাঠামো রয়েছে। এসএ গেমস থেকে শুরু করে অলিম্পিক পর্যন্ত ব্যক্তিগত-দলীয় ব্রোঞ্জ-স্বর্ণ পদক অর্জনের আলাদা আলাদা আর্থিক পুরস্কার নির্ধারিত রয়েছে। সেই নীতিমালা মোতাবেক দুই গেমসে পদকজয়ীরা পুরস্কৃত হয়েছেন। ৩য় এশিয়ান ইয়ুথ গেমসে ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্ত কাবাডি (বালক) এবং কাবাডি (বালিকা) দল পেয়েছেন ৮ (আট) লাখ করে মোট ১৬ লাখ টাকা। দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোচদের তিন লাখ ২০ হাজার টাকাসহ মোট ১৯.২০ লাখ টাকা দেওয়া হয় কাবাডি দলকে।
বিজ্ঞাপন
৬ষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে টেবিল টেনিসে মিক্সড ডাবলসে পদকপ্রাপ্ত ২জন ক্রীড়াবিদ খৈ খৈ এবং জাভেদ আহমেদ ১.৫ লাখ টাকা হারে মোট ৩ লাখ টাকা পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কোচ মোস্তফা পেয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। ভারোত্তলনে ৩টি ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় ইকরা ২ লাখ টাকা হারে মোট ৬ লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট কোচ ১.২০ লাখ টাকা পেয়েছেন। উশুতে ব্রোঞ্জ পদকপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ শিখা ২.০ লাখ টাকা এবং কোচ ৪০ হাজার টাকা পেয়েছেন। ইসলামিক গেমসে পদকপ্রাপ্তরা মোট ১৩.২০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার পেয়েছেন।
গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট হলে সংবর্ধনা এবং অর্থ পুরস্কার অনুষ্ঠান হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিওএ’র সভাপতি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বিওএর বিদায়ী মহাসচিব জনাব সৈয়দ শাহেদ রেজা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অংশগ্রহণকারী সব খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক এবং দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে অভিনন্দন জানান এবং সবার সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশে বিশ্বমানের আধুনিক ক্রীড়া অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারবো মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা যদি যুব সমাজকে খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি তবে খেলাধুলার মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল দেশ ও জাতি গঠন করা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম তার বক্তব্যে সব ক্রীড়াবিদদের পদক অর্জনের মাধ্যমে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনায় অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের অলিম্পিক কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনি মাননীয় যুব এবং ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ নজরুলের সহযোগিতা প্রদানের সদিচ্ছা সম্পর্কে সবাইকে অবগত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য মহাসচিব জোবায়েদুর রহমান রানা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে খেলোয়াড়দের দীর্ঘমেয়াদী সারা বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি বিওএ’র সভাপতি মহোদয়কে বাংলাদেশ অলিম্পিক কমপ্লেক্স নির্মাণের মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। ৩য় এশিয়ান ইয়ুথ গেমসের শেফ দ্য মিশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হুমায়ূন কবীর তার বক্তব্যে গেমসে অংশগ্রহণে অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং তিনি উল্লেখ করেন যে, “প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই”।
৬ষ্ঠ ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের শেফ দ্য মিশন এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া) মো. সেলিম ফকির দেশের খেলাধুলার মান উন্নয়নে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে তিনি সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
এজেড/বিআরইউ