দুই ওভার আগে অর্থাৎ ইনিংসের ৮১তম ওভারে নতুন বল হাতে পায় উইন্ডিজ দল। তবে উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দলের দুই ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান আর নুরুল হাসান সোহানের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রতিরোধী ব্যাটিংয়ে স্বাগতিক শিবিরের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান এই দুইজন। 

ইনিংসের ৮৩তম ওভারে নতুন বল হাতে ছুঁটছেন অভিজ্ঞ পেসার কেমার রোচ। সে সময় কমেন্ট্রি বক্স থেকে এক ধারাভাষ্যকার বলে উঠলেন, ‘ক্যারিবীয় সমর্থকরা তাকিয়ে রোচের দিকে। তিনিই হয়তো কাঙ্ক্ষিত ব্রেক-থ্রু এনে দিবেন।’ সেই সময়েই কিনা ‘ব্রেন ফ্রেড’ হয়ে গেল সাকিবের। উড়িয়ে মারতে গেলেন রোচকে। ভেসে যাওয়া বল মিড উইকেটে তালুবন্দি করেন ক্রেইগ ব্র‍্যাথওয়েট।

সাকিবের বিদায়ে সপ্তম উইকেটে ১২৩ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে বাংলাদেশ দলের, একই সঙ্গে হৃদয় ভাঙায় আর্তনাদ সফরকারী শিবিরে। সোহানের সঙ্গে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের রয়াসনটা জমেছিল বেশ। স্কোর বোর্ডে তরতর করে রান উঠছিল টাইগারদের। তাতে লিড বাড়িয়ে স্বাগতিকদের সামনে বড় লক্ষ্য জমা করছিল তারা। সাকিবের আউটে সেই স্বপ্ন ভাটা পড়ে বাংলাদেশ দলের।

অথচ অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে দাপট বাংলাদেশের। ধ্বংস্তূপে দাঁড়িয়েও স্বপ্নে মতো একটি সেশন কাটায় সফরকারীরা। যেখানে ২৭ ওভার ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ৯৫ রান তোলে তারা। অথচ চা বিরতি থেকে ফিরে টপাটপ ৪ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

ফিফটি করে সাকিব ৫৩ আর ১ রানের অপেক্ষায় থাকা সোহান ৪৯ রান দিয়ে দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনের খেলা শুরু করেন। বিরতি কাটিয়ে ফিরেই টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক পেয়ে যান সোহান। সাকিব-সোহানের ব্যাটে যখন মনে হচ্ছিল বড় লিডের পথে ছুটছে বাংলাদেশ দল, তখনই সাজঘরে সাকিব। ৯৯ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ৬টি চার মারেন।

সাকিবের আউটের পর নতুন বল সামলাতে পারেননি সোহানও। ক্যারিয়ার ও ইনিংস সেরা ৬৪ রান করে বিদায় নেন তিনি। ১৪৭ বল খেলে ১১টি চার মারেন এই উইকেটরক্ষক। পরে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারলে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যায় অধিনায়ক সাকিবের দল। স্বাগতিকদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন রোচ।

টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। পরে উইন্ডিজকে অলআউট করে ২৬৫ রানে। এতে মাথায় ওপর ১৬২ রানের লিড দাঁড়ায়। এই রান শোধ দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৩ রানের লিড বাংলাদেশ। এতে ক্যারিবীয়দের সামনে ৮৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়।

টিআইএস/ওএফ