এশিয়া কাপের শুরুটা দুর্দান্তই হলো আফগানিস্তানের। অন্তত শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস শেষে এটা বলাই যায়! 

ইনিংসের শুরু থেকে শেষতক একের পর এক আফগান তোপের মুখেই পড়েছে লঙ্কানরা। শেষমেশ ইনিংস শেষ করেছে মোটে ১০৫ রান তুলে। 

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের নিয়তিই যেন এই, টস জেতো, ফিল্ডিং নাও, ম্যাচটা পকেটে পোরো। দুবাইয়ের বুকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়না অনেক দিন। এরপরও আফগান অধিনায়ক নবী ভরসা রেখেছিলেন সেই মূলমন্ত্রেই। লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকাও জানিয়েছিলেন, টস জিতলে ফিল্ডিংই বেছে নিতেন। দুই অধিনায়কের ভাবনাটা যে মোটেও অমূলক নয়, তার প্রমাণই যেন দিল লঙ্কানদের প্রথম ইনিংস। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া আফগানরা শুরু থেকেই ছিল ম্যাচের চালকের আসনে।  

শুরুটা করেছিলেন ফজলহক ফারুকি। প্রথম ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে তার করা বলটা মিডল-অফ স্টাম্পে গুড লেন্থে পড়ে একটু সুইং নিয়ে চলে যায় লেগ স্টাম্পে। স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ফ্লিক করে পাঠাতে চেয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস, ব্যাটে বলে হয়নি, বল গিয়ে সোজা আঘাত হানে প্যাডে। শুরুতে আম্পায়ার সায় না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় আফগানরা, পায় প্রথম উইকেটের দেখা।

এরপরের বলে আরও এক সফলতা। এবার বাঁহাতি ব্যাটসম্যান চারিথ আসালঙ্কা বনলেন ফারুকির শিকার। লেন্থ বলটা অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পড়ে আসালঙ্কাকে চমকে দিয়ে ঢোকে ভেতরে। এলবিডব্লিউর আবেদনে এবার সফলতা পায় আফগানরা।

পরের ওভারের শেষ বলে পাথুম নিসাঙ্কা প্রতি আক্রমণে চমকে দিতে চেয়েছিলেন প্রতিপক্ষকে। নাভিন উল হকের অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পড়া বলটাকে তুলে দিতে চেয়েছিলেন কভারের একটু ওপর দিয়ে। সে চেষ্টায় ব্যর্থ তো তিনি হয়েছেনই, উল্টো তার ‘ব্যাট ছুঁয়ে’ বলটা গিয়ে জমা পড়েছে উইকেটরক্ষক রাহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে।

সে সিদ্ধান্ত রিভিউ করেন নিসাঙ্কা। ব্যাটে বলের কোনো ছোঁয়ার প্রমাণ আল্ট্রাএজেও দেখা যায়নি। তবু আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন। যা বিতর্কের জন্ম দিল বৈকি!

শুরুতেই তিন উইকেট খোয়ানো শ্রীলঙ্কাকে এরপর লড়াকু পুঁজির আশা দেখাচ্ছিল দানুশকা গুনাথিলাকা আর ভানুকা রাজাপাকশার জুটি। দুজন মিলে পাওয়ারপ্লেতে আর কোনো বিপদ হতে দেননি দলের। তবে পাওয়ারপ্লে শেষেই যেন গুনাথিলাকার মাথায় কী যেন খেলে গেল! রিভার্স সুইপ করলেন মুজিব উর রহমানকে। ডিপ কভারে ফিল্ডার দেখার পরও। শেষমেশ বলটা গিয়ে জমা পড়ে সেখানে থাকা কারিম জানাতের হাতে। ৪৪ রানের জুটি ভাঙে শ্রীলঙ্কার, সাথে সাথে যেন ভাঙে লড়াকু পুঁজির আশাটাও।

এরপর শ্রীলঙ্কা উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। চামিকা করুণারত্নে লড়েছেন একাই। কিন্তু ওপাশে একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা যাওয়ায় লঙ্কানরা এক পর্যায়ে দুই অঙ্কে অলআউটের শঙ্কায় পড়ে যায়। ৭৫ রানে খুইয়ে বসে ৯ উইকেট। 

সেখান থেকে শ্রীলঙ্কা ১০০ রান তুলেছে কেবল করুণারত্নের কল্যাণেই। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে তিনি করেছেন ৩১ রান। তাতেই লঙ্কানদের প্রথম ম্যাচে জয়ের আশাটা নিভু নিভু হয়ে হলেও জ্বলছে খানিকটা।

এনইউ