এশিয়া কাপের ঠিক আগে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলকে খোলনলচে বদলে দেওয়ার জোর চেষ্টাই হলো। ‘নতুন’ অধিনায়ক হলেন সাকিব আল হাসান; কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে সরিয়ে দেওয়া হলো টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব থেকে, তার জায়গায় এলেন ‘টেকনিক্যাল কনসাল্টেন্ট’ শ্রীধরন শ্রীরাম। সাকিব-শ্রীরাম জুটির হাত ধরেই নতুন যুগের আশায় বুক বাঁধছে বাংলাদেশ। আজ এশিয়া কাপের ম্যাচ দিয়ে সেই নতুন দিনের আনুষ্ঠানিক সূচনাই হতে যাচ্ছে।

কাজটা সহজ নয়। শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ সাকিবদের প্রতিপক্ষ যে আফগানিস্তান, যারা শ্রীলঙ্কাকে রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়ে এশিয়া কাপের শুরুটা করেছে দুর্দান্তভাবে। যে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ তো বটেই, এশিয়া কাপের বাকি প্রতিপক্ষকেও বুঝি একটা বার্তা দিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ নবীরা।

সাম্প্রতিক ফর্ম বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে না মোটেও। শেষ পাঁচ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা জিতেছে মোটে একটি ম্যাচ। আছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারের দুঃস্মৃতিও। ওদিকে আফগানিস্তান শেষ পাঁচ ম্যাচে জিতেছে তিনটিতে। মুখোমুখি লড়াইয়েও আফগানিস্তান এগিয়ে বেশ। নয় লড়াইয়ে আফগানিস্তান জিতেছে ৫ ম্যাচে, আর বাংলাদেশের জয় ৩টি, একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত। 

আফগান স্পিন জুটি রশিদ খান আর মুজিব উর রহমান তো আছেনই, এই দলের এখন ফজলহক ফারুকি নামের এক পেসারও আছেন বৈকি! শেষ মার্চে তিনি বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন বেশ। এরপর এবারের এশিয়া কাপের শুরুর ম্যাচেও তাকে দেখা গেছে দারুণ ছন্দে। এই তিনজনকে দারুণ সঙ্গই দিচ্ছেন মোহাম্মদ নবী আর নাভিন উল হকরা। ফলে আফগানদের বোলিং দুর্ভেদ্য দুর্গই হয়ে আছে রীতিমতো।

ব্যাটিংয়ে আফগানরা কী করতে পারে, সেটার একটা নমুনাও দেখা গেছে প্রথম ম্যাচে। পাওয়ারপ্লেতে রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর হজরতউল্লাহ জাজাই মিলে তুলেছিলেন ৮৩ রান। তাদের দিয়ে শুরু করে নবী, রশিদ আর আটে নামা আজমতউল্লাহ ওমারজাই গিয়ে শেষ হয় আফগানদের ব্যাটিং লাইন আপ। তাদের লাইন আপ যে যথেষ্ট গভীর, তার একটা আন্দাজ মেলে এ থেকে।

এদিকে বাংলাদেশ নতুন অধিনায়ক সাকিবের অধীনে নতুন শুরুর আশায় আছে। তবে আশার পিঠে বেশ কিছু প্রশ্নও আছে দলের। ওপেনিং নিয়ে প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি। লিটন দাস চোটের কারণে নেই, এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে নাঈম শেখের ইনিংসের গোড়াপত্তনের সম্ভাবনা প্রবল আজ। যাদের দুজনেরই আবার টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইক রেট নিয়ে আছে প্রশ্ন। বোলিং নিয়েও আছে প্রশ্ন, জিম্বাবুয়ের মাটিতেই যে ২০০ হজম করে এসেছে দল!

তবে সে সবই অবশ্য বাংলাদেশের পুরোনো দিনের কথা। সাকিব-শ্রীরামের হাত ধরে ‘নতুন’ বাংলাদেশ নিশ্চয়ই চাইবে সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে আফগান ধাঁধার সমাধান করতে!

এনইউ