ভারতের বিরুদ্ধে এবার সত্যিই ‘টেবিলে’ লড়বে বিসিবি?
অ্যাডিলেড ওভালের ম্যাচ শেষ হতেই ঘরমুখো ভারতীয় সমর্থকরা মেতেছিলেন বাংলাদেশের প্রশংসায়। তাদের প্রায়ই সবাই বলছিলেন, বৃষ্টির পর মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। না হলে ম্যাচটা জিততেই যাচ্ছিল টাইগাররা। তবে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হারা ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা সরব দুটো বিষয়, ফেইক ফিল্ডিং আর ভেজা মাঠে খেলা নিয়ে। কারণ দুটো ব্যাপারই শেষ অব্দি ভারতেরই পক্ষে গেছে।
ভেজা মাঠে খেলার সময় ব্যাটে ঝড় তোলা লিটন দাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হয়েছেন রান আউট। তবে তার আগেই নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন রান নেওয়ার সময় ফেইক ফিল্ডিং করেন খোদ বিরাট কোহলি। দুটোই বিতর্কই এখন আলোচনার টেবিলে। কারণটাও সঙ্গত। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানদের আপত্তিতেও মাঠের আম্পায়ার অটল ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে।
বিজ্ঞাপন
ফেইক ফিল্ডিং নিয়ে আম্পায়ারকে তখনই জানিয়েছিলেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু সাড়া মেলেনি আম্পায়ারের। যেটিতে বাংলাদেশ ৫ রান পেত। আর সেটি হলে তো ম্যাচটাও জিতে যেতে পারত টাইগাররা! এরপর ভেজা মাঠে খেলার ব্যাপারেও আপত্তি ছিল সাকিবের। এখানেও কথা বলে লাভ হয়নি।
এ অবস্থায় নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। অস্ট্রেলিয়ায় দলের সঙ্গে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস অবশ্য জানালেন নিজেদের অবস্থান। স্পষ্ট করলেন এখানে চাইলেই এ নিয়ে অভিযোগ করতে পারে না।
বিজ্ঞাপন
তবে বিসিবি এ নিয়ে কথা বলতে চায় ঠিক জায়গায়। জালাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন ‘দেখুন, এটা সহজ না যে কিছু হলেই বোর্ড গিয়ে এ নিয়ে আলাপ করবে। এটা তো স্কুল না যে আপনি হেডমাস্টারের কাছে অভিযোগ করবেন। এই ধরনের অবস্থা না। তারপরও এটি আমাদের মাথায় আছে। যাতে সঠিক ফোরামে গিয়ে কথা বলতে পারি আমরা।’
এখানে শেষ নয়, পুরো প্রসঙ্গটা নিয়ে জালাল ইউনুস আরও বলেন, ‘দেখুন, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে দুটো ইস্যু- যার একটা ফেইক থ্রো। সেটি আম্পায়ারের নজরে আনা হয়েছে, আম্পায়ার বলছে তারা এটি খেয়াল করেনি। এ কারণে রিভিউতে যায়নি। সাকিব এটা নিয়ে অনেক আলোচনা করেছে মাঠের আম্পায়ারে সঙ্গে। খেলার পরও কথা বলেছে। একই সময়ে মাঠ ভেজা নিয়েও কথা হয়, সাকিব বারবার বলেছে- সময় নিয়ে মাঠটা শুকানো হোক, তারপর খেলা শুরু করুন। আপনারা জানেন আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। সেখানে তর্ক বিতর্ক করার কোনও সুযোগ ছিল না। এখানে সিদ্ধান্ত একটা আপনি খেলবেন কি খেলবেন না।’
জালাল মনে করেন, বৃষ্টির পর মাঠ পুরোপুরি শুকিয়ে খেলা শুরু করা উচিত ছিল। তিনি বলছিলেন, ‘দেখুন, যে অবস্থা ছিল মাঠে তারা ইচ্ছা করলে আরেকটু ১০-১৫ মিনিট মাঠকে শুকিয়ে খেলা শুরু করলে ভালো হত। আমার কাছে মনে হয়েছে যে বল কিছুটা নরম হয়ে গিয়েছিল। যেখানে বল নরম হয়ে গেলে শট খেলা কঠিন। সেখানে স্লো হবেই, আপনি দেখবেন যে প্রথম যে শট খেলেছেন পরে তা সম্ভব ছিল না। মাঠ ভেজা ছিল, বল ও নরম ছিল।’
জালাল এ প্রসঙ্গে আরও যোগ করেন, ‘বোর্ডের বাকি যারা কর্মকর্তা রয়েছেন আমাদের মাননীয় বোর্ড সভাপতি রয়েছেন সবাই খেলা দেখছি। টিভি স্ক্রিনে গ্লোবালি সবাই দেখছেন তো আপনি যে কথা বলেছেন এরকম সুযোগ আছে কিনা অভিযোগ করার। সরাসরি অভিযোগ না এটা তাদের অ্যাটেনশনে আনতে পারি যখন আইসিসির মিটিং চলে তখন সিইসি বা টেকনিক্যাল মিটিং হয় তখন এই আম্পায়ারসদের ব্যাপারে সেখানে আলাপ করার সুযোগ আছে। আমরা সেটা করবো এবং এ নিয়ে আলাপ হয়েছে। সামনে আইসিসির মিটিং আছে এখানেই হবে, অস্ট্রেলিয়াতেই মিটিং আছে আপনারা জানেন। কিছু ইস্যু আছে সব আপনাদের সামনে বলছি না।’
বোর্ড কর্তাদের এমন কথার হুংকার অবশ্য নতুন নয়। আসল কথা হলো মহাশক্তিধর ভারতের বিপক্ষে যায় এমন কিছু করার সামর্থ্য আর ইচ্ছেটুকু আছে কি না বিসিবির!
এটি/এনইউ