সীমিত ওভারের রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে আলো ছড়ালেও টেস্ট ফরম্যাটে বেহাল দশা বাংলাদেশ দলের। নিজেদের ২০ বছরের টেস্ট ইতিহাস একেবারেই সুখকর নয়। 

করোনা সংক্রমণের পর কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নেমেছিল টাইগাররা। ফলাফল সবারই জানা, ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের দুটো ম্যাচই হারতে হয়েছে মুমিনুল হকের দলের। 

সামনে শ্রীলঙ্কা সফর। সেখানে লঙ্কানদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে খুব বেশি প্রস্তুতির সুযোগ নেই বাংলাদেশ দলের সামনে। ঘরের মাঠে নাস্তানাবুদ তামিম ইমবাল, মুশফিকুর রহিমরা বিদেশের চ্যালেঞ্জ নিতে পারবেন তো?

করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় দেশের ক্রিকেট। এরপর গত অক্টোবরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে ফেরার কথা ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। তবে কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে বনিবনা না হওয়ায় লঙ্কা সফর করেনি টাইগাররা। এরপর সাদা পোশাকে কোনও প্রস্তুতি ছাড়া উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। ফলাফল ভুলে যাওয়ার মতো। ঘরের মাঠেও দুই ম্যাচেই হার বাংলাদেশ দলের।

এবার শ্রীলঙ্কা সফর। বিদেশির মাটিতে এমনিতেই জয়ের দেখা পাওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত ৫৬টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৪টি জয়। যদিও নিজেদের শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতে জয় আছে তামিমদের। তবে বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। 

আগামী ২২ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) আসন্ন মৌমুস। এ সময় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা থাকবেন নিউজিল্যান্ডে। সেখানে সীমিত ওভারের দুই ফরম্যাটের লড়াই। যারা টেস্ট দলে বিবেচিত হবেন, এমন খেলোয়াড় এনসিএলের শুরু থেকে খেলবেন হাতেগোনা দুই-একজন। বাকিরা নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে ধরবেন লঙ্কাগামী বিমান।

যদিও শ্রীলঙ্কা সিরিজের সূচি চূড়ান্ত হয়নি। তবে আগামী ১২ এপ্রিল দেশ ছাড়ার কথা আছে টাইগারদের। সেখানে গিয়ে কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ করে একটি ৩ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। লাল বলে মোটে তিনদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ বিদেশের মাটিতে কতটুকু সাহায্য করবে? এ নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। 

বৃহস্পতিবার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানালেন, দেশ ছাড়ার আগে নিউজিল্যান্ড ফেরতদের এনসিএলের একটি রাউন্ড খেলানোর চেষ্টা করা হবে। 

নান্নু বলেন, ‘লাল বল সাদা বলের ক্রিকেটটা সম্পূর্ণ আলাদা। একটা পার্থক্য তো আছেই। তারপরও শ্রীলঙ্কা গিয়ে যথেষ্ট সময় পাবে। আমরা যদি একটা তিনদিনের ম্যাচ খেলতে পারি এবং লাল বলে যথেষ্ট অনুশীলন করতে পারি, তাহলে মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখন যারা টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা দেশে আছে ওরা দুই রাউন্ড খেলতে পারবে। আমাদের তৃতীয় রাউন্ড হবে পাঁচ এপ্রিল থেকে। আমরা আলোচনা করছি। যারা নিউজিল্যান্ড থেকে আসার পর এক রাউন্ডের জন্য ফাঁকা থাকবে, শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে যদি একটা রাউন্ড খেলা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করব।’

যদি-কিন্তুতে আটকে যাওয়া এনসিলের তৃতীয় রাউন্ড খেলতে নামলে বিশ্রামের সুযোগ মিলবে না ক্রিকেটারদের। যেখানে ঘরের মাঠেই বেহাল দশা, সেখানে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে কতটুকু সফল হবে টাইগাররা?

টিআইএস