রুদ্ধশ্বাস লড়াই গড়াল সুপার ওভারে। যেখানে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চারিথ আসালঙ্কা ও কুশল পেরেরার হাফ সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে  ১৯৬ রান করে সফরকারীরা। যদিও ড্যারিল মিচেলের হাফ সেঞ্চুরি এবং লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটারদের দাপটে সেই লক্ষ্য ছুঁতে না পারলেও ইশ সোধির শেষ বলের বীরত্বে ম্যাচ 'টাই' করে কিউইরা। পরে সুপার ওভারে আসালঙ্কার ব্যাটে বিজয়ের হাসি হেসে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লঙ্কানরা।

বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্র লং অফে ধরা পড়েন দাসুন শানাকার প্রথম বলেই। পরের দুই বলে দুই রান করে নেন নতুন ব্যাটসম্যান সোধি। চতুর্থ বলে বাই থেকে আসে একটি রান, পঞ্চম বলে সিঙ্গেল। এরপর শেষ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল আরও ছয় রান। শ্রীলঙ্কার দিকেই পাল্লা ভারী ছিল। তবে মুহূর্তটা রাঙালেন কিউই ১০ নম্বর ব্যাটার ইশ সোধি। লঙ্কান অধিনায়কের করা শেষ বলটি গ্যালারিতে নিয়ে ফেললেন সোধি। 

রোমাঞ্চকর ম্যাচটা টাই করতে পারলেও জয় পায়নি স্বাগতিকরা। সুপার ওভারে দারুণ বোলিং করে কেবল ৮ রান দেন মাহিস থিকসানা। মার্ক চাপম্যান একটি চার মারতে পারেন বটে। তবে জিমি নিশাম ও চাপম্যানকে শেষ পর্যন্ত আউট করে দেন থিকসানা। মূল ম্যাচের ঝড়ো ফিফটি করা চারিথ আসালানকা এরপর সুপার ওভারেও ছক্কা ও চার মেরে জিতিয়ে দেন দলকে। 

রোববার (২ এপ্রিল) অকল্যান্ডে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৯৬ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। যদিও শুরুটা ভালো ছিল না সফরকারীদের।ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেটরক্ষক টম লাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান পাথুম নিশাঙ্কা। তবে এরপর দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪৭ রানের জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস এবং কুশল পেরেরা। যদিওহেনরি শিপলির করা শর্ট বলে ফাইন লেগে রাচিন রবীন্দ্রের হাতে ধরা পড়েন মেন্ডিস। এরপর সাজঘরে ফেরেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও। তিনি ফিরে যাওয়ার পর ম্যাচের প্রেক্ষাপট বদলে দেন পেরেরা এবং চারিথ আসালঙ্কা। দুজনে জুটি গড়েন ১০৩ রানের। ৪১ বলে দুটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন আসালঙ্কা। 

এদিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩ রান তুলতেই দুই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ওভারে সেফার্টকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মহেশ থিকসানা। আর দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে চাদ বাওয়েসকে বোল্ড করেন দিলশান মাদুশাঙ্কা।

দলটির হয়ে সাময়িক বিপর্যয় সামাল দেন লাথাম এবং ড্যারিল মিচেল। এই দুজনের ৬৩ রানের গড়া জুটিতে লড়াইয়ে ফেরে স্বাগতিকরা। আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৬৬ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেন মিচেল। এরপর শেষ ওভারের নাটকীয়তা এবং শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চের নানা মোড় পেরিয়ে সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কার জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা : ২০ ওভারে ১৯৬/৫ (নিশাঙ্কা ০, কুশাল মেন্ডিস ২৫, কুশাল পেরেরা ৫৩, ধনাঞ্জয়া ১৫, আসালাঙ্কা ৬৭, শানাকা ১, হাসারাঙ্গা ২১*; মিল্ন ৪-০-৪২-১, লিস্টার ৪-০-৪৩-১, শিপলি ৪-০-৪৩-১, নিশাম ৪-০-৩০-২,  সোধি ৪-০-৩৩-০)।

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৯৬/৮ (বাওয়েস ২, সাইফার্ট ০, ল্যাথাম ২৬, মিচেল ৬৬, চাপম্যান ৩৩, নিশাম ১৯, রবীন্দ্র ২৬, মিল্ন ৩, শিপলি ১, সোধি ১০*; থিকসানা ৪-০-২২-১, মাদুশাঙ্কা ৩-০-৪৫-১, মাদুশান ৪-০-৩৭-২, করুনারত্নে ৩-০-৩৬-০, হাসারাঙ্গা ৪-০-৩০-২, শানাকা ২-০-২০-২)।

ফল: ম্যাচ টাই, সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কা জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০তে এগিয়ে।

ম্যান অব দা ম্যাচ: চারিথ আসালাঙ্কা।

এফআই