প্লে-অফে উঠতে অলৌকিক কিছুই করতে হতো কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। নিজেদের শেষ ম্যাচে লখনৌকে শুধু হারালেই হতো না, সেই সঙ্গে অন্য দলগুলোর ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হতো। তবে গতকাল (শনিবার) শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ১ রানের হারে ‘যদি কিন্তুতে’ যেতে হলো না কেকেআরের। আরেকটি প্লে-অফে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে কলকাতার। চলতি মৌসুমে লিগ পর্বে ১৪টি ম্যাচের মধ্যে ৬টি ম্যাচ জিততে পেরেছে তারা। বিপরীতে হার ৮টি ম্যাচে। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির এমন ব্যর্থতায় ছাঁটাই হতে পারেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। 

আসরের শুরু থেকেই একাধিক সমস্যায় ভুগেছে কেকেআর। প্রথম একাদশ এবং ওপেনিং জুটিতে বদল এসেছে প্রায় নিয়মিতই। একাধিক ক্রিকেটারের ছন্দে না থাকা এবং ধারাবাহিকতার অভাব প্রভাব ফেলেছে দলের পারফরম্যান্সে। আগামী বছর ভাল ফল করতে চাইলে কেকেআর কর্তৃপক্ষকে দলে কিছু পরিবর্তন করতে হবে বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। আর তাই জায়গা হারাতে পারেন তারকা ক্রিকেটারদের কেউ কেউ। 

কেকেআরের হয়ে শিরোপা জয়ে অন্যতম ভূমিকা ছিল দুই ক্যারিবিয়ান সুনীল নারিন ও আন্দ্রে রাসেলের। গুরুত্বপূর্ণ অনেক ম্যাচে তাদের হাত ধরে জয় পেয়েছে কলকাতা। তবে এবার যেন নিজেদেরই হারিয়ে খুঁজেছেন তারা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারিনের বলেরও ধার কমেছে। এবারের আইপিএলে ১৪টি ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন ১১টি। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৭.৯৭ রান। তার বল খেলতে ব্যাটাররা তেমন সমস্যায় পড়েননি। প্রতিটি উইকেট নিতে নারিন খরচ করেছেন ৩৪.৮১ রান। প্রতি ২৬.১৮ বলে একটি উইকেট পেয়েছেন।

ব্যাট হাতেও আগের মতো পারফরম্যান্স করতে পারছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার। এবারের আইপিএলে করেছেন মাত্র ২১ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭। গড় ৩। স্ট্রাইক রেট ৮৪। ফিল্ডার নারিনও সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। শেষ দু’টি ম্যাচ ছাড়া দলকে কোনো ভরসাই দিতে পারেননি কেকেআরের সবচেয়ে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। কেকেআর তার ওপর আসরজুড়ে আস্থা রাখলেও ৩৪ বছরের ক্রিকেটার শুধু হতাশই করেছেন। আগামী বছর তাকে ছেড়ে দিতে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

অন্যদিকে, অতীতের ছায়া হয়ে রয়েছেন আন্দ্রে রাসেল। ১৪টি ম্যাচ খেললেও বলার মতো তেমন পারফরম্যান্স নেই তারও। ব্যাট হাতে ২০.৬৪ গড়ে করেছেন ২২৭ রান। সর্বোচ্চ ৪২। স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৫১। কয়েকটি বড় শট নিলেও ব্যাট হাতে দলের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি ৩৫ বছরের ক্যারিবিয়ান।বল হাতেও সাফল্য নেই।  ১৪টি ম্যাচে পেয়েছেন ৭টি উইকেট। ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ১১.৩৪। ১টি উইকেট নিতে খরচ করেছেন ১৩ রান। কেকেআরের হয়ে আগামী মৌসুমে নাও দেখা যেতে পারে তাকে। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি ও লুকি ফার্গসুনরাও ভরসা রাখতে ব্যর্থ। তাদের জায়গাও নড়বড়ে অনেকটা।