টি-টোয়েন্টিতেও সেই হতশ্রী বাংলাদেশ
অসহায় আত্মসমর্পণ করে ফিরছেন সৌম্য সরকার। পুরো বাংলাদেশ দলের প্রতীকী চিত্রই এটি/গেটি ইমেজ
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
নিউজিল্যান্ড: ২১০/৩, ২০ ওভার (কনওয়ে ৯২, ইয়ং ৫৩, ফিলিপ্স ২৪; নাসুম ২/৩০, মেহেদী ১/৩৭)
বাংলাদেশ: ১৪৪/৮, ২০ ওভার (আফিফ ৪৫, সাইফউদ্দিন ৩৪*, নাইম ২৭; সোধি ৪/২৮, ফার্গুসন ২/২৫)
বিজ্ঞাপন
ফল: নিউজিল্যান্ড ৬৬ রানের জয়ী।
ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে আজ রোববার দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইনজুরির কারণে তামিমের সফর সঙ্গী হয়ছেন পেসার হাসান মাহমুদ। দুজনের কেউই টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলবেন না। দুই সতীর্থর দেশে ফেরার ব্যাপারটি কি মনে ক্ষত তৈরি করলো বাকিদের? তা নাহলে এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের কারণ কি, টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ৬৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারের ব্যাখ্যা আছে কি দলের অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে?
বিজ্ঞাপন
কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে শুরু থেকে খুব বেশি খুশি ছিলেন না টাইগার ক্রিকেটাররা। পরিবার ছাড়া এভাবে ১৪ দিনের ঘরবন্দি জীবন শেষ করে কাটিয়েছেন তারা? নিউজিল্যান্ডের কড়া কোভিড নিয়ম মেনে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষ করে কিছুটা হাঁপিয়ে উঠেছিল সফরকারীরা। তবে খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য সেটিকে দায়ী করতে নারাজ তারা।
তামিম ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে দেশের বিমান ধরেছেন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে, তবে জানা গেছে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরেও কোয়ারেন্টাইনে থাকবে হবে বাংলাদেশ দলের, এজন্য মাঝে কিছুদিন বিশ্রাম পেতে আগেভাগে নিউজিল্যান্ড ছেড়েছেন তিনি। তামিমের সঙ্গে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। চোটের কারণে একাদশের বাইরে তিনি। কিন্তু এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের জন্য সেটিকে কোনোভাবেই অজুহাত হিসেবে দাঁড় করানো যায় না।
আইপিএলের কারণে নিউজিল্যান্ড মূল দলের ৬ ক্রিকেটার নেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সে হিসেবে জয় খরা কাটানোর খুব ভালো সুযোগ ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের সামনে। সে সুযোগ কাজে লাগানো তো দূরের কথা, উল্টো অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশ দলের। আগে ব্যাট করে ২১১ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় কিউইরা। যা টপকাতে নেমে ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। এতে ৬৬ রানের জয়ে দিয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টিম সাউদির দল।
ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলায় হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে ভয়ডরহীন ক্রিকেটের বার্তা দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সে বার্তার সঠিক প্রয়োগ হলো কই? চলমান সফরে অধিনায়ক বদলালেও বদলাচ্ছে না টস ভাগ্য, আগের তিন ম্যাচে টস হেরেছেন তামিম, এবার হার মাহমুদল্লাহর। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে অভিষেক হওয়া ফিন অ্যালেনের উইকেট হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড। এরপর ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেন গাপটিল, কনওয়ে ও ইয়ং।
৩৫ রান করে অভিষিক্ত নাসুমের দ্বিতীয় শিকার হন গাপটিল। তবে থামান যায়নি কনওয়েকে। ইয়াং নিজের ফিফটি তুলে ব্যক্তিগত ৫২ রান করে আউট হলেও ব্যাট হাতে ধড় তোলেন কনওয়ে। শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৫২ বলে ৯২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ১১টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাকান কনওয়ে। শেষদিকে গ্লেন ফিলিপসের অপরাজিত ১০ বলে ২৪ রানের ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২১০ রানে থামে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।
২১১ রানের পাহাড়সময় লক্ষ্য টপকাতে নেমে শুরুতে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে ৪৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে টাইগাররা। একে একে ফিরে যান লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন ও নাইম শেখ। রান পাননি অধিয়ানক মাহমুদউল্লাহ ও শেখ মেহেদী হাসানও। এক পর্যায়ে ৫৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা।
সেখান থেকে দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তাদের পঞ্চাশ রানের পার্টনারশিপে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল সফরকারীরা। তবে ব্যক্তিগত ফিফটির আগে ফিরলেন আফিফ। ৪৫ রান করে ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ৩৩ বলে ইনিংসটি ৫টি চার ও ১টি ছয়ের মারে নিজের ইনিংসিটি সাজান আফিফ। পরে সাইফউদ্দিনের অপরাজিত ৩৪ রানের কল্যাণে হারের ব্যবধান কমে শুধু। নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে ৬৬ রানে জয় তুলে মাঠ ছাড়ে কিউইরা।
টিআইএস/এনইউ/এটি