দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে একজন নির্ভরযোগ্য লেগস্পিনার পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এই অভাবটা পূরণে সুযোগ দিয়ে যাচ্ছিলেন রিশাদ হোসেনকে। যদিও আক্ষেপ ছিল তিনি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে সেভাবে সুযোগ পাচ্ছিলেন না বলে। সেসব পুরোনো, লেগস্পিনের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও রিশাদ ঝড় তুলতে পারেন সেটাই এখন নতুন করে আলোচনায়। টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও তিনি আজ (সোমবার) তাণ্ডব চালিয়েছেন।

সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে আজ বাংলাদেশের একাদশে যুক্ত হন রিশাদ। আগের দুই ওয়ানডের একাদশে না থাকা এই লেগস্পিনার আজ নিজের প্রথম বলে এসেই উইকেট নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৯ ওভারে ৫১ খরচায় নেন এক উইকেট। এরপর ব্যাট হাতেও যখন মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য যোগ্য কাউকে দরকার, তখনই খেলেছেন দুর্দান্ত এক ইনিংস।

ব্যাট হাতে নেমে নিজের প্রথম বলেই স্লগ সুইপে ছক্কা মেরে শুরু করেন রিশাদ। কিছুটা নার্ভাস মনে হলেও, ২১ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারকে পরে আর ভেবেচিন্তে খেলতে হয়নি। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন সজোরে। তার এই ঝোড়ো ব্যাটিং দেখে একপর্যায়ে হেসে ফেলেন মুশফিক, তাতে যোগ দেন রিশাদ নিজেও। শেষ পর্যন্ত ১৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রানের চোখধাঁধানো অপরাজিত ইনিংস খেলে থামেন। কারণ তাতেই যে দলের সিরিজ নির্ধারণী জয় এসে গেছে।

পরে এমন ঝোড়ো ইনিংস খেলার সময় মুশফিকের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল তা জানান পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে। ম্যাচসেরা রিশাদ বলেন, ‘প্রথমে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম, পরে আমি ব্যাটে-বলে ভালোভাবেই সংযোগ করতে পেরেছি। মুশফিক ভাই বলেছেন, তোমার জোনে (জায়গায়) বল পেলে মেরে দাও।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ম্যাচটা জিততে পারায় আমি খুবই আনন্দিত। সকল প্রশংসা শক্তিশালী আল্লাহর।’ পরে নিজের জন্য দোয়া চান এই স্পিন অলরাউন্ডার।

এর আগে বাংলাদেশের ভালো শুরু এনে দেন ইনজুরিতে পড়া সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি হিসেবে ওপেনিংয়ে নামা তানজিদ হাসান তামিম। ৮১ বল মোকাবিলায় তরুণ এই ব্যাটসম্যান ৮৪ রান করেন। ভালো শুরুর পরও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মেহেদী মিরাজ যখন বিদায় নিয়েছেন, তখন ক্রিজে আছেন কেবল মুশফিক। অথচ জয় পেতে ৪ উইকেটে স্বাগতিকদের আরও ৫৮ রান প্রয়োজন। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে আর মুশফিককেও ভাবতে দেননি রিশাদ। মুশফিকও শেষ পর্যন্ত ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এএইচএস