একদিকে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, অপরদিকে স্বাগতিক হিসেবে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে নামছে পাকিস্তান। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের বড় কোনো সাফল্য নেই। কয়েকদিন আগে শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজেও ফাইনালে হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে। সেই কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আগামীকাল (বুধবার) পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নামছে। তার আগে সুখবর দিলেন পাক অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান।

নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে ইনজুরিতে পড়েন পাকিস্তানের তারকা পেসার হারিস রউফ। বৈশ্বিক আসরটিতে তাকে ফিট অবস্থায় পেতে আর সেই সিরিজে খেলানো হয়নি। তবুও ছিল অনিশ্চয়তা। সেই শঙ্কা কাটিয়ে ডানহাতি এই পেসারের ফিট হয়ে ওঠার কথা জানিয়েছেন রিজওয়ান। তার মতে– কোনো সমস্যা ছাড়াই এখন বল করতে পারছেন হারিস রউফ।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগেরদিন আজ (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের অধিনায়ক রিজওয়ান বলেন, ‘হারিস দু’দিন আগেও ৬-৮ ওভার বল করেছে এবং গতকালও বল করেছে কোনো সমস্যা ছাড়াই। আজও তাকে পুরো ছন্দে দেখা গেছে। জিমেও কাজ করার সময় কোনো ব্যথা কিংবা সমস্যার কথা জানায়নি। তাই আমরা মনে করছি সে সম্পূর্ণ ফিট।’

অনুশীলনে হারিস রউফ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর শুরুর অনেক আগেই নিজেদের ইনফর্ম ওপেনার সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। তবুও টুর্নামেন্টটিতে তাকে পাওয়ার আশা ছিল পিসিবির। তবে শেষ পর্যন্ত সাইমকে ছাড়াই পাকিস্তান স্কোয়াড ঘোষণা করে। হারিস রউফও ছিটকে গেলে তা হতো দলটির জন্য বড় ধাক্কা। বুকে ‘লোয়ার গ্রেড’ ইনজুরির কারণে তিনি ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর আর খেলেননি। তবে পিসিবির আশা ছিল– চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেই সেরে উঠবেন রউফ। রিজওয়ানের সংবাদ সম্মেলনের পরও ম্যাচ পূর্ববর্তী চূড়ান্ত অনুশীলনে ঘাম ঝরাতে দেখা গেছে।

পাকিস্তানের পেস আক্রমণে হারিসের সঙ্গে শাহিন আফ্রিদি এবং নাসিম শাহ থাকলে, প্রতিপক্ষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। ঘরের মাঠের এই টুর্নামেন্ট দিয়ে দেশটিও দীর্ঘদিনের শিরোপাখরা কাটাতে চায়। এর আগে পাকিস্তান সর্বশেষ বৈশ্বিক ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবার নিজেদের মাটিতে আইসিসি টুর্নামেন্টে নামার আগমুহূর্তে রিজওয়ান বলছেন, ‘আমরা ১০ বছর ধরে ভুগেছি, কোনো দেশ এখানে খেলতে আসেনি। তবে পাকিস্তান এখন সঠিক পথেই আছে। নিজেদের সামর্থ্য নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই।’

সদ্য অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে কিউইদের বিপক্ষে দুইবার মুখোমুখি হয়ে জয় পাওয়া হয়নি রিজওয়ান-বাবরদের। এবার বড় মঞ্চেও তাদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে পাকিস্তানের। এ প্রসঙ্গে রিজওয়ানের বার্তা, ‘এখানে উত্থান-পতন থাকবেই। আমরা পেশাদারিত্ব ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্যে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে উন্নতি আনতে সতর্কাবস্থায় আছি। ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে আমরা শিখেছি, নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করতে আগে ব্যাট করেছি ফাইনালে। আমরা পরীক্ষামূলক অভিজ্ঞতা হিসেবে নিয়েছিলাম ওই সিরিজকে। আশা করি আগামীকালের ম্যাচের আগে আমরা যথেষ্ট শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছি।’

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা ধরে রাখতে সবাই খুবই তৃষ্ণার্ত বলেও উল্লেখ করেন পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটাপর, ‘আমরা বেশ কয়েকবার (বড় প্রতিযোগিতায়) খুব নিকটে গিয়ে হেরেছি। বড় ম্যাচে জয়ের জন্য কীভাবে আরও এক শতাংশ নিবেদন বেশি দিতে হয় তা নিয়ে কাজ করা দরকার। সাফল্যের ব্যাপারে কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারে না। আমরা সেই চূড়ান্ত পদক্ষেপটি খুঁজে পেতে চাই, যা আমাদের বড় ম্যাচ কিংবা টুর্নামেন্টে উৎরে দিতে পারে। এই শিরোপা জিততে সবাই খুবই বিতৃষ্ণ। জয়ের জন্য আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়ব। আমি মনে করি অন্য কোনো দেশ আমাদের মতো এত পরিশ্রম করতে পারে না।’

এএইচএস