ডিআরএস নিয়ে বিতর্কের সমাধান কী হতে পারে জানালেন স্টার্ক
মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় দূর করতে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস নেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রযুক্তিও যদি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এই যেমন চলমান অ্যাশেজ সিরিজের অ্যাডিলেড টেস্টে তিনবার স্নিকোমিটারে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। আর এমন ভুল যেন না হয়, সেজন্য মিচেল স্টার্ক আইসিসির তত্ত্বাবধানে সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে একই পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার প্রশ্ন তুলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেন ডিআরএস প্রযুক্তির জন্য খরচ দেয় না। তার বিশ্বাস সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা ব্যবস্থায় অসামঞ্জস্য এড়াতে সবগুলো ম্যাচে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত।
বিজ্ঞাপন
ব্যাটে বল ছুঁয়েছে কি না তা নির্ধারণে ডিআরএসে ‘দুটি আওয়াজভিত্তিক প্রান্ত শণাক্তকরণ প্রযুক্তি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে আইসিসি। একটি স্নিকো, যেটা অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহৃত হয়। আর বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে আলট্রা এজ ব্যবহার করা হয়। তৃতীয় টেস্ট চলাকালে সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং বলেন, ‘আম্পায়াররা আর আস্থা রাখতে পারছে না স্নিকোতে, আল্ট্রা এজই অনেক ভালো।’
অ্যাডিলেডে প্রথম দিনেই বিতর্ক তৈরি করে স্নিকো মিটার। অ্যালেক্স ক্যারি তার ব্যাট ঘেষে যাওয়া বলের শব্দ শুনলেও স্নিকো মিটারের ভুলে বেঁচে যান এবং সেঞ্চুরি করেন অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটার। ক্যারির ব্যাটে বল স্পর্শ করার স্পাইক দেখা গিয়েছিল, কিন্তু ওই সময় ব্যাট-বলের মাঝে ব্যবধান স্পষ্ট ছিল। আবার যখন ব্যাট-বল কাছাকাছি তখন স্পাইক অদৃশ্য, অথচ ক্যারি নিজেও নাকি আওয়াজ শুনেছেন। পরে স্নিকোমিটার কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুলও স্বীকার করে নেন।
বিজ্ঞাপন
দ্বিতীয় দিনেও প্রযুক্তি বিভ্রাট ফিরে এসেছে। এবার তার মুখোমুখি হন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটার জেমি স্মিথ। স্নিকোয় ওঠা স্পাইক অনুযায়ী তাকে দুই দফায় নটআউট এবং আউট দিয়েছে। যা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। প্যাট কামিন্সের বল পুল করে ছয় হাঁকানোর পরের বলে স্মিথের ব্যাট ঘেষে বল উসমান খাজার হাতে ধরা পড়ে। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল স্মিথের গ্লাভসে লাগেনি, হেলমেট ছুঁয়েছে। যা নিয়ে অজি ক্রিকেটারদের বিরক্তি ছিল স্পষ্ট। অজি অধিনায়ক আবারো আক্রমণে আসতে জেমি স্মিথ ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। থার্ড আম্পায়ারকে সিদ্ধান্তের ভার দেওয়া হয়, তিনি যখন টিভি রিপ্লে দেখছিলেন তখন ব্যাট-বলের ব্যবধান স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও স্নিকোতে স্পাইক দেখা যায়, সে অনুসারে স্মিথকে আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। অবিশ্বাসের চোখে ক্ষোভ নিয়ে কিছু বলতে বলতে মাঠ ছাড়েন এই ইংলিশ ব্যাটার। একই দিন আরেকটি ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্টার্ককে স্টাম্প মাইকে বলতে শোনা গেছে ‘স্নিকো বাদ দেওয়া উচিত’।
জানা গেছে, ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ডিআরএসের প্রটোকল পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছে। স্টার্ক অবশ্য তার মতামত জানিয়ে রাখলেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, এটা (স্নিকোর অসংগতি) নিঃসন্দেহে দর্শক, ম্যাচ অফিসিয়াল ও ব্রডকাস্টার সবার জন্যই হতাশাজনক। আমি একটা কথা বলব.. নিজের মতামত জানাতে চাই। অফিসিয়ালরাও তো এটা ব্যবহার করে, তাই না? তাহলে এটার খরচ আইসিসি কেন দেয় না? কেন সব বোর্ডে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না? আমরা কেন সব সিরিজে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করি না, যা কম সংশয় তৈরি করবে, কম হতাশ করবে? আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই।’
এফএইচএম/