শামীম পাটোয়ারি/ফাইল ছবি

মাত্রই দুটো ক্যামিও। তবে জিম্বাবুয়ের মাটিতে, প্রতিপক্ষ যখন শ্রেয়তর হয়ে ওঠার হুমকি দিচ্ছে, পরিস্থিতি দলের প্রতিকূলে, তখনই এসেছে এই দুটো ছোট্ট অথচ কার্যকরী ইনিংস। অভিষেকের দ্বিতীয় ম্যাচের পরই তাই তরুণ অলরাউন্ডার শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে কথা হচ্ছে বেশ। 

এবার তাকে নিয়ে বললেন ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্সও। জানালেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজ দেখে তার মনে হয়েছে শামীম পাটোয়ারী দারুণ এক প্রতিভা।

অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি, আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে সিরিজ, আর সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, প্রায় সবকটাতেই পারফর্ম করেছেন বেশ। ইনিংসের শেষ দিকে নেমে মিটিয়েছেন দ্রুত রান তোলার চাহিদাও।

তবে শামীম আলোচনায় এসেছিলেন তার ব্যাটিং প্রতিভা দিয়ে। তার ব্যাটের গতি দারুণ। একটু আগেভাগেই বল পড়ে ফেলার ক্ষমতা আছে ঝুলিতে। সঙ্গে যখন যোগ হয় তুখোড় রানিং বিটুইন দ্য উইকেট, আর ভয়ডরহীন মানসিকতা, তখন তাকে নিয়ে আলোচনা না হয়েই পারে না।

অভিষেকের মাহেন্দ্রক্ষণে/ক্রিকইনফো

ব্যাটিং প্রতিভার ঝলকটাই তিনি দেখিয়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে। বিষয়টা চোখে পড়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থেকে দলের সঙ্গে যোগ হওয়া নতুন ব্যাটিং পরামর্শক প্রিন্সের। 

তবে শামীমের আগে আরও দুই তরুণ আফিফ হোসেন আর নুরুল হাসানেরও বেশ প্রশংসাই করেছেন সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। সম্প্রতি ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো একই সফরের তিন সিরিজেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে এর চেয়ে আমি আফিফ ও নুরুলে মুগ্ধ হয়েছি। তারা দুজনেই সাহসী। বিশেষত আফিফ, সে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খুবই ঠাণ্ডা থাকে। তারা সাদা বলের ক্রিকেটে দলকে অনেক কিছু দিতে পারবে।’

এরপরই এলেন শামীম প্রসঙ্গে। বললেন, ‘তাকে দেখে আমার মনে হয়েছে, শামীম এক দুর্দান্ত প্রতিভা। সে সাহসী ও ভয়ডরহীন, ঠিক আফিফ, আর সোহানের মতো।’ জাতীয় দলে ঢোকার আগেই আলোচনায়, এরপর এমন ঝলমলে অভিষেকের পরও অবশ্য শামীম সাজঘরে পাচ্ছেন স্বাভাবিক পরিবেশই। প্রিন্স বললেন, ‘দলের কেউই তাকে কোনো তকমা দিয়ে দিচ্ছে না। যদি কিছু হয়ে থাকে, তাহলে সেটা সাজঘরের বাইরে হচ্ছে।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শামীম, আফিফ, আর নুরুলের পারফর্ম্যান্সে ইনিংসের শেষদিকে ভালো কিছু বিকল্পের সন্ধান দিয়েছে বাংলাদেশকে; প্রয়োজনের সময় যারা তুলতে পারবেন দ্রুত কিছু রান, আবার ম্যাচ পরিস্থিতিতে ইনিংস গড়ার কাজেও দিতে পারবেন মনোযোগ। বাংলাদেশের ব্যাটিং পরামর্শকের মতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটাই।

প্রিন্সের ভাষ্য, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে সমন্বয়টা বেশ জরুরী। আপনার হাতে খেলোয়াড় আছে যারা শুরুর দিকে সুরটা বেঁধে দিতে পারবেন, এরপর আসবেন তারা যারা দলকে নিয়ে যাবেন জয়ের বন্দরে। এ বিষয়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।’ 

লড়াইয়ের রসদ পাওয়া গিয়েছে। এবার বিশ্বকাপের আগে দলকে ঝালিয়ে নেওয়ার পালা। অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে পা রেখেছে। যাদের বিপক্ষে আগামী ৩ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে পাঁচ টি-টোয়েন্টি খেলবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এরপর সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ আছে ঘরের মাঠে, পরের মাসেই আবার ইংল্যান্ডকে দিতে হবে আতিথেয়তা। এমন সূচির পর বিশ্বকাপে পা রাখবে বাংলাদেশ।

কোচ প্রিন্সের অভিমত, বিষয়টা দারুণ এক সুযোগ। বললেন, ‘আমার মনে হয় বিসিবি যে সূচি সাজিয়েছে, এটা বিশ্বকাপের আগে দলের জন্য নিজেদের তৈরি করে নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ। টুর্নামেন্টের ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করলে সেটা দলকে মানসিকভাবেও চনমনে করে তুলবে বিশ্বকাপে।’

এনইউ/এটি