দুবাইয়ে পা দিয়ে করোনা টেস্টে দ্বিতীয়বার নেগেটিভ হয়েও হাসিমুখ ছিল না। কারণ ঘুম থেকে উঠেই যে ১৩৮ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিতে হবে। শারজাহর পালা শেষে এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মিশন আবুধাবি। সাকিবদের অনুসরণ করতে এসে পারস্য উপসাগরের এই দ্বীপে ম্যাচ কাভার করতে অন্তত এক মাঠে দুইবার যেতে হচ্ছে না, স্বস্তি এখানেই।

শ্রীলঙ্কার কাছে অনেক ভুলে ম্যাচ হেরে যাওয়ার যন্ত্রণাটা এখনো তাজা। লম্বা ভ্রমণ, আরও চারটা ম্যাচ সামনে। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে বুধবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। ম্যাচের আগের দিন ভেন্যুতেই অনুশীলনের একটা চর্চা থাকে। কিন্তু দেড় ঘণ্টার বেশি ভ্রমণ শেষে আরেক শহরে যাওয়ার ধকল নিচ্ছেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা।

ম্যাচের আগের দিন আজ মঙ্গলবার দুবাইয়েই থাকছে টাইগাররা। স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় বাংলাদেশ দল অনুশীলন করবে দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) একাডেমি মাঠে। তার আগে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হবেন বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ। অন্তর্জালে রিমোট জায়গা থেকে চলবে সংবাদ সম্মেলন। তার জন্য একটা স্বস্তির ব্যাপার, গণমাধ্যম কর্মীদের সরাসরি মুখোমুখি হতে হচ্ছে না! 

তবে সুপার টুয়েলভে প্রথম ম্যাচে ভালো জায়গায় থেকেও হার এবং সাম্প্রতিক সময়ে মাঠের বাইরের কিছু ঘটনা স্বস্তি দিচ্ছে না রিয়াদকে। দল হারলে সমালোচনা যেমন ঢের হচ্ছে, ক্রিকেটারদের লাগাম ছাড়া প্রতিক্রিয়া নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তার মধ্যে সামনে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। যারা আগের ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে। ভাবা যায় ক্যারিবীয়রা তাদের সামনে স্পিন জুজুতে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট! তারপর ৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের দেখা পেয়ে যায় এউইন মরগানের দল।

বাছাই পর্বের বৈতরণী পার হয়ে আসা দলটির সামনে শ্রীলঙ্কা দুঃস্বপ্নের পর এবার তো আরও কঠিন পরীক্ষা। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ইংলিশদের সঙ্গে লড়াইয়ে অবশ্য যোগ হয়ে আছে একটা ঐতিহাসিক ব্যাপারও। এটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে এবারই প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। যদিও ওমান-আমিরাতের এই বিশ্বকাপের আগেই বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তাদের ক্রিকেটাররা খেলবেন বলে সফরটা আটকে দেয় ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড। 

২০ ওভারের ক্রিকেট না হোক ওয়ানডেতে কিন্তু ইংলিশদের বিপক্ষে দারুণ এক স্মৃতি রয়েছে বাংলাদেশ দলের। নিশ্চয়ই ক্রিকেটপ্রেমীরা ভুলে যাননি ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা। যেখানে অ্যাডিলেডে ইংলিশ দলকে বিদায় করে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। যদিও পরের বিশ্বকাপেই পাল্টা জবাব দিতে ভুল করেনি তারা। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে কার্ডিফে ওদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে দল।

এবার কি তাহলে বাংলাদেশের পালা? ইংল্যান্ড যে ফর্মে আছে তাতে স্বপ্ন দেখার স্পর্ধা কোথায়? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যত ভুল সব শুধরে নিতে হবে, মাহমুদউল্লাহদের মাথা থেকে ফেলতে হবে মাঠের বাইরের সব বিতর্কও। ভেন্যু শহর পাল্টাচ্ছে, এবার যদি প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মিলটা হয় টাইগারদের। 

এটি/এমএইচ/জেএস