চলতি বছরের শুরু থেকেই টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অবস্থা শোচনীয়। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে সর্বমোট ৬ টেস্টে হেরে দলটি গিয়েছিল অ্যাশেজে। সেখানেও টানা তিন টেস্টে হেরে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের সব আশা শেষ হয়ে গেছে দলটির। গড়ে ফেলেছে লজ্জার রেকর্ডও। 

দলের এমন পারফর্ম্যান্সের পর অধিনায়কের ওপর দায় আসাটা খুবই স্বাভাবিক। জো রুট সেটা টেরও পাচ্ছেন। ইংলিশ কিংবদন্তি জেফ্রি বয়কট রীতিমতো শূলেই চড়িয়ে দিয়েছেন তাকে। সম্প্রতি ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘জো এর অধিনায়কত্বে কল্পনাশক্তির অভাব আছে। তার দল নির্বাচন, আর সিদ্ধান্তগ্রহণ মোটেও যুতসই নয়।’

সবশেষ ম্যাচে ইংলিশদের বিপক্ষে ৮২ রানের লিড নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে এই ম্যাচেও ৬৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে ইংলিশরা হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। ১৯০৪ সালের পর থেকে অজিদের মাটিতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটাও তাতে গড়ে ফেলে দলটি। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ১৮ বছরের পুরনো লজ্জার রেকর্ডেও সঙ্গী হয় ইংলিশরা। এক বছরে সবচেয়ে বেশি হারের রেকর্ড গড়ে ফেলে ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। 

লজ্জার রেকর্ড নামটা জড়িয়ে গেল রুটেরও। তার অধীনেই যে সবকটা ম্যাচে হেরেছে তার দল। সে কারণেই তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বয়কট। বলছেন, ‘এই সিরিজ শেষে নিজেদের এই প্রশ্নটা করা উচিত, অধিনায়ক বদলে কি ইংল্যান্ড দল উপকার পাবে?’

তবে এই কথা কোনো প্রকার ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে বলছেন না তিনি, সেটাও পরিষ্কার জানিয়ে দেন বয়কট। বলেন, ‘জো কে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি এই কথা বলছি না, কিংবা বিতর্ক সৃষ্টি করার ইচ্ছেও আমার নেই। আমরা সবাই জো-কে ভালোবাসি। তাকে ভালো না বাসাটা অসম্ভব।’

অ্যাশেজের জন্য দেশ ছাড়ার আগে জো রুট জানিয়েছিলেন, তাসমান সাগরপাড়ের এই সিরিজই তার দল ও তার নিজের জন্য অ্যাসিড টেস্ট। সেই টেস্টে যে তার দল ব্যর্থ, সেটা তো অ্যাশেজের তিন টেস্টেই বোঝা গেছে পরিষ্কার। বয়কট চটেছেন দলের এমন পারফর্ম্যান্সের কারণেই।  
বলেছেন, ‘কিন্তু দেশ ছাড়ার আগে জো বলেছে, এই সিরিজটাই তার দলের খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের নির্ণায়ক হবে। এখন পর্যন্ত আমরা এই সিরিজে যাচ্ছেতাই পারফর্ম করেছি, জো নিজে যা বলেছে, তা যদি বিশ্বাস করে, তাহলে এখনই নেতৃত্বটা অন্য কাউকে দেওয়া উচিত, খেলোয়াড়দেরকে ঝালাই করার সুযোগ দেওয়া উচিত।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘দলের সাফল্যের পর যদি অধিনায়ক কৃতিত্ব নিতে পারে, তাহলে দলের ব্যর্থতায়ও কিছু দায় নেওয়া, সমালোচনার মুখে পড়তেই হবে তাকে।’

রুট অবশ্য এখনই অধিনায়কত্ব ছাড়তে চান না। ভুল থেকে শিখে নতুন শুরু চান দলের। বয়কট তাও উড়িয়ে দিতে চাইলেন তুড়িতেই। বললেন, ‘জো বলছে এমন ব্যর্থতার পর একটা প্রতিক্রিয়া দেখতে চায় দলের, কিংবা বলছে দলটা তাদের বাজে পারফর্ম্যান্স থেকে শিখবে তার দল। আমাদের মধ্যে অনেকেই এসব সাক্ষাৎকারে বিরক্ত। এমন ছাইপাঁশ শুনতে শুনতে বিরক্ত আমরা। সাবেক খেলোয়াড়, সমর্থকদেরকে বোকা বানানো বন্ধ কর। সত্যি বলতে, সেখানে আমরা কেবল হারিইনি, তুলোধুনোই হয়েছি।’

এনইউ