লক্ষ্য মাত্র ২১২ রানের। তাতেই শুরুতে এইডেন মার্করামকে হারিয়ে হোঁচট খেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডিন এলগার আর কিগান পিটারসেনের জুটিতে তা অবশ্য ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছিল দলটি, তবে মাঝে একবার ডিআরএসের কল্যাণে বেঁচে ফিরেছেন অধিনায়ক এলগার; প্রতিক্রিয়ায় রেগেমেগে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি, সহ অধিনায়ক লোকেশ রাহুল, রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা মাঠেই আয়োজকদের একহাত নিলেন। দিনের খেলা শেষ হলেও সেই ঘটনা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা, সমালোচনা চলছে এখনো।

ঘটনার সূত্রপাত প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় ইনিংসের ২১তম ওভারে। ২১২ তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলেছে ৬০ রান। তখনই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল গিয়ে আঘাত হানে এলগারের প্যাডে। ভারতের এলবিডব্লিউর আবেদনে ইতিবাচক সাড়াও দেন আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউতে বল ট্র্যাকিংয়ের সময় দেখা যায় ডেলিভারিটা চলে যেত স্টাম্পের ওপর দিয়ে।

এই বল ট্র্যাকিং টেকনোলজি মূলত পরিচালনা করে হক আই নামের একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, যারা সম্প্রচারকারীদের ডেটা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সুপারস্পোর্টও হেঁটেছে একই পথে। 

তবে সেই রিভিউতে এলগার বেঁচে যাওয়ার পর কোহলি নিজের হতাশা চেপে রাখতে পারেননি মোটেও। বলটা লেগেছিল এলগারের হাঁটুর একটু নিচে, যা খোলা চোখে দেখে ‘প্লাম্ব’ মনে হচ্ছিল, সেটাই বেরিয়ে গেছে স্টাম্পের ওপর দিয়ে। তাতেই কোহলির মনে হয়েছে ঠকানো হয়েছে তার দলকে। 

ওভারের বিরতিতে স্টাম্প মাইকের কাছে গিয়ে বললেন, ‘নিজেদের দল যখন বল চকচকে বানায়, তখন তাদের ওপর মনোযোগ দাও, প্রতিপক্ষের ওপর নয়। সবসময় লোকজনকে ধরার চেষ্টা চলছেই!’ 

কোহলি একা নন অবশ্য, যোগ দিলেন রাহুলও। বললেন, ’১১ জন মানুষের বিরুদ্ধে পুরো দেশ লেগে গেছে মনে হচ্ছে!’ অশ্বিন তো আরেক কাঠি সরেস। তার মনে হয়েছে, ভারতকে ম্যাচটা হারানোর ফন্দিই এটা। বলেছেন, ‘জেতার জন্য আরও ভালো একটা উপায় খুঁজে বের করো সুপারস্পোর্ট!’

শুধু ভারতীয় খেলোয়াড়রাই নন, এই রিভিউ হতবাক করে দিয়েছে আম্পায়ার ইরাসমাসকেও। ভেন্যুতে যখন এই রিপ্লে দেখা যাচ্ছিল, তখন দারুণ অবিশ্বাস নিয়ে এদিক ওদিক মাথা ঘোরাচ্ছিলেন আম্পায়ার। এমনকি তাকে বলতেও শোনা গেছে, ‘এটা অবিশ্বাস্য!’

দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই প্রতিনিধি যথাক্রমে ভারতীয় বোলিং কোচ পরশ মামব্রে আর লুঙ্গি এনগিডি, দুই জনই এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন বিষয়টা কেবলই একটা তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া ছিল ভারতের। যদিও ম্যাচে এরপর ভারতের আরেকটা প্রতিক্রিয়া বলছে ভিন্ন কথাই। 

দিনের শেষ বলে যশপ্রীত বুমরাহর লেগ স্টাম্পের বাইরে করা বলটা খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এলগার। তবে আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোলস্টক সেটা আউট দেননি, রিভিউ নেয় ভারত। তখনই কোহলি স্টাম্প মাইকের কাছে এসে আবারও বলেন, ‘এবার কীভাবে এটা দেখাবে কে জানে!’

যদিও সে যাত্রায় সাফল্যই পেয়েছেন কোহলিরা। আলট্রাএজে দেখা মেলে স্পাইকের, তাতেই বিদায়ঘণ্টা বাজে এলগারের। সঙ্গে সঙ্গে দিনের শেষ ঘোষণা করেন দুই আম্পায়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলে। জিততে তাদের চাই ১১১ রান। 

এনইউ