বয়সভিত্তিক দলে আলো ছড়িয়ে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলে ডাক পান মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রায় সাড়ে ৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এর এগে কখনো সেঞ্চুরির স্বাদ পাননি এই অলরাউন্ডার। অথচ বয়সভিত্তিক দলে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই নামডাক ছিল তার। বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে মিরাজের। ব্যাট হাতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন তিনি। এর পরেও নাঈম হাসানকে নিয়ে ভাবনা তার।

ঘরের মাটিতে ধীরগতির উইকেটে স্পিন নির্ভর দল নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তবে তিন স্পিনার খেলালে সেখানে অফ স্পিনার থাকেন একজন। সম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিচারে একজন অফ স্পিনারের ভাবনায় এগিয়ে আছেন নাঈম। এজন্য চলমান উইন্ডিজ সিরিজের আগে সবশেষ ২০১৯ সালে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মিরাজ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে চার স্পিনার খেলানোয় আবার সুযোগ মিলেছে। 

প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই অবশ্য বাজিমাত করেছেন মিরাজ। তবে সেটি অফ স্পিনে নয়, ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি। এমন দিনে যেখানে উৎসবে মেতে ওঠার কথা, সেখানে খুব বেশি স্বস্তি পাচ্ছেন না মিরাজ। কারণ, দেশের বাইরে যখন টেস্ট খেলতে নামবে টাইগাররা, সেখানে কমে আসবে স্পিনারের সংখ্যা, সঙ্গত কারণেই নাঈমের কাছে জায়গা হারাতে হতে পারে তার।

এখন অবশ্যই নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। অনেকদিন ধরে রান পাচ্ছিলাম না। নিজেও হতাশ ছিলাম। বিগত কিছুদিন নিজেও কাজ করেছি। ভালো ব্যাটিং হয়েছে। তবে যেটা বললেন নাঈম, নাঈম ভালো অফ স্পিনার। আমিও খেলছি। এটা হয়তো টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তারা যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই ভবিষ্যতে করবেন এবং এখনো করছেন।

মেহেদি হাসান মিরাজ, অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

ক্যারিবীয় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলিং দিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। এবার টেস্টে আলোচনায় এলেন ব্যাটিং দিয়ে। সব মিলিয়ে সময়টা মধুর কাটছে মিরাজের। তবে সব সময় যে এমনই মধুর কাটবে তা জানেন মিরাজ। সেজন্যেই দুঃসময়ের জন্যেও নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক অনেক টাফ। আল্লাহর রহমতে আজকে হয়তো ভালো হয়েছে, ভবিষ্যতে ভালো ও খারাপ সময় যাবে। টিম কম্বিনেশনের জন্য অনেক কিছু হতে পারে। সবার আগে দল প্রথম। আমি হয়তো আজকে ১০০ করেছি, পরের দিন রান নাও করতে পারি। উইকেট পেতে পারি, নাও পেতে পারি। এগুলো জীবনের অংশ।’

এদিকে অনূর্ধ্ব-১৭ এর পর অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও মিরাজের পরিচয় ছিল ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ২০১৩ ইয়ুথ টেস্ট চ্যাম্পিয়শিপে শতক আছে তার। তবে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং স্বত্বাকে হারিয়ে বসেন মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও কোনও শতক ছিল না মিরাজের। যদিও এজন্য ভাগ্যকে দুষতে পারেন তিনি। উপরের দিকে তেমন ব্যাট করার সুযোগ পাননা তিনি। তবে ১০৩ রানের এই ইনিংসের পর নিজেকে আবার ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান মিরাজ। 

এ প্রসঙ্গে মিরাজ জানালেন, ‘আমার নিজের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। আমি নিজে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। কিন্তু এখন আমার মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে, যদি আমি ব্যাটিং নিয়ে আরো পরিশ্রম করি, কাজ করি, তাহলে অবশ্যই ভালো অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। আমার কথা হল যেহেতু আমার সুযোগ আছে, তাহলে কেন আমি সেই সুযোগ কাজে লাগাব না।’

টিআইএস/এনইউ/এটি