মেসি ও রোনালদো, আবারো বছর দুই পর ন্যু ক্যাম্পে মুখোমুখি/ছবি: গেটিইমেজ

লিওনেল মেসি আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ক্যারিয়ার-সায়াহ্ন যেন আসি আসি করেও আসছে না। বয়স যথাক্রমে ৩৩ আর ৩৬ হয়ে গেলেও দুজনে লড়ছেন ইউরোপীয় শীর্ষ লিগে, তরুণ পারফর্মারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। এমন ফর্ম নিয়ে মেজর লিগ সকারে কে যায়? তবে ডেভিড বেকহ্যাম সেই অসম্ভবটাই সম্ভব করার স্বপ্নে বিভোর, দুজনকে নিজ দল ইন্টার মিয়ামিতে চান তিনি। 

ইতোমধ্যেই ব্লেইস মাতুইদি ও গঞ্জালো হিগুয়েইনের মতো খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়েছে মিয়ামি। কিন্তু মেসি-রোনালদো? বেকহ্যাম বললেন, ‘তারা এমন খেলোয়াড় যাদের আমরা ক্লাবে আনতে তীব্রভাবে আগ্রহী। আমি মনে করি, ভক্তরাও ব্যাপারটা পছন্দ করবে।’

তবে তাতে তাদের ক্রীড়া প্রকল্প লাভবান হবে কিনা তা নিয়েও ভাবনা চলছে তার মগজে, ‘মালিক হিসেবে আমরা এমন খেলোয়াড়কে আনতে চাই যার তীব্র ইচ্ছাশক্তি আছে, জিততে চায়, এটাই প্রাধান্য দিচ্ছি আমরা। তবে অদূর ভবিষ্যতে সুযোগ হলে মেসি-রোনালদোদের মতো বড় নামকেও দলে ভেড়াতে চাই। তারা শেষ ১৫ বছর ধরে খেলাটার শীর্ষ পর্যায়ে আছে।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘এসব ক্ষেত্রে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন দারুণ ছিলেন। তিনি সবসময় ক্লাবে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়টাকে আনতেন না। ক্লাবের জন্য সেরা হবেন যিনি, তাকেই আনতে চাইতেন। আর আমি নিজেও আমার ক্লাবে এ বিষয়টা আনতে চাই, ক্লাবের জন্য সঠিক খেলোয়াড়কেই দলে আনতে চাই।’

এ তো গেল বেকহ্যামের কথা। মেসি-রোনালদো কী চান? গেল ডিসেম্বরেই বার্সা অধিনায়ক নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের জীবনের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। লা সেক্সটাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাপনের অভিজ্ঞতাটা কেমন তা দেখতে চাই, এ কথা আমি সবসময়ই বলে এসেছি। সেখানকার জীবনযাত্রা, সেখানকার লিগ সবকিছু নিয়েই অভিজ্ঞতাটা নিতে চাই। কিন্তু আমি জানি না এটা সম্ভব হবে কিনা।’

রোনালদোর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর পর্তুগাল সতীর্থ লুই ন্যানিও জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী রোনালদোও। গত জুনে ইএসপিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক বছর আগে সে আমাকে বলেছিল, সে ক্যারিয়ারের শেষটা যুক্তরাষ্ট্রে করতে চায়। এটা শতভাগ নিশ্চিত নয়। কিন্তু একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।’

শেষ কিছুদিনে মেসির সঙ্গে বার্সেলোনার লুকোচুরি খেলা চলছে। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক এখনো বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তি সই করেননি। আর তাই কাতালুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামী মৌসুমের শুরুতেই যে মেসি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাবেন ব্যাপারটা তেমনও নয়। তাকে পেতে আগ্রহী ইউরোপীয় পরাশক্তি পিএসজি ও ম্যানচেস্টার সিটি। তাদের কোনো একটায় হয়তো খেলবেন। আবার থেকে যেতে পারেন ন্যু ক্যাম্পেও। সেটা হলে ক্যারিয়ারের একেবারে শেষদিকে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে তাকে দেখা যেতেও পারে। 

রোনালদো বয়স ৩৬ ছুঁয়ে ফেললেও খেলছেন তরুণ তুর্কিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। জুভেন্তাসের সঙ্গে তার চুক্তি শেষ হবে ২০২২ সালে। এরপর বিশ্বকাপ শেষে হয়তো পাড়ি জমাবেন মার্কিন মুল্লুকে। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে দুজনেই ইউরোপীয় ফুটবল থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশ। তবে দুজনকেই একসঙ্গে মেজর লিগ সকারে খেলবেন কিনা, সে প্রশ্নের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক বছর।

এনইউ/এটি