তাকে নিয়ে কতো যে শঙ্কা। মাঠে নামার আগেও নিশ্চিত করে বিশ্লেষকরা বলতে পারছিলেন না কিছুই। বলা হচ্ছিল সব ঠিক থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে মাঠে দেখা যাবে তাকে। সবকিছু ঠিক থাকল আর নেইমারও দেখালেন তার সেই চেনা ঝলক! মাতিয়ে রাখলেন পুরোটা সময়। গোলও পেলেন। নকআউট পর্বে ব্রাজিলকে জেতালেন ৪-১ গোলে। বনে গেলেন ম্যাচসেরা। 

অথচ সোমবারের আগে দৃশ্যপটটা ভিন্নই ছিল। অনেকেই তো বলছিলেন ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ তার। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন। তারপর টানা দুই ম্যাচ ছিলেন সাইডলাইনে। ফিরেই চমক। তার ম্যাজিকেই তো সোমবার দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে ব্রাজিল পা রাখল কোয়ার্টার ফাইনালে। 

কিন্তু এমন রঙিন একটা মুহুর্ত আসার আগে দুঃসহ সময় কেটেছে নেইমারের। সার্বিয়ার ম্যাচ শেষে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় রাতভর ফেলেছেন চোখের জল। কেঁদেছেন অঝোরে। 

কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচসেরা হয়ে সেই সময়টার কথাও শোনালেন নেইমার। ব্রাজিলের সময়ের সেরা এই তারকা বলছিলেন, ‘অবশ্যই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া নিয়ে অনেক ভয়ে ছিলাম। এই সময়টাতে খুব ভালো খেলছিলাম। ভালো একটি মৌসুম চলছে আমার। এর মধ্যে এমন অ্যাঙ্কেলের চোট মেনে নেওয়া কঠিন। সেই রাত আমি কেঁদে কেঁদেই কাটিয়েছি।’

তবে ফেরার জন্য ছিলেন মরিয়া। তাইতো রাত শেষেই নেমে পড়েন লড়াইয়ে। পায়ের ইনজুরিটা যে করেই হোক সেরে উঠা চাই। সার্বিয়ার ম্যাচের পরদিন সকাল ১১টা পর্যন্ত টানা ফিজিওর সঙ্গে কাজ করেন। তারপর থেকে ভোর ৫টা-৬টা পর্যন্ত কাজ চলতে থাকে। এমন পরিশ্রমেই সেরে উঠলেন নেইমার। 

দুঃস্বপ্নের সেই সময় শেষে গণমাধ্যমে নেইমার বলছিলেন, ‘চোট পাওয়ার সেই রাতে আমার মাথায় ছিল অনেক শঙ্কা, ভয়। সেখানে কোনো আশা ছিল না। আমি জানতাম-সেই আশাহীন পথ থেকেই নতুন শক্তি খুঁজে নিতে হয়। সতীর্থদের ও পরিবারের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। আমার জন্য যারা প্রার্থনা করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

কাতার বিশ্বকাপে লড়াই শেষ হয়ে যায়নি। ব্রাজিল উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। ৯ ডিসেম্বর যেখানে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। তার আগে ইস্পাত কঠিন প্রত্যয় নেইমারের। ত্রিশের এই মহাতারকা আত্মবিশ্বাসে যেন টগবগ করছেন, ‘আমি জাতীয় দলের জয়ের জন্য সম্ভব সবকিছুই করব।’

এটি