সম্প্রতি ফিফা দ্য বেস্ট ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। আগামী জুনের পর কোন ক্লাবে তার ঠিকানা হতে পারে এ নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে৷ সম্ভাব্য ক্লাবের তালিকায় আমেরিকা ও সৌদি ক্লাবের সঙ্গে নাম ছিল মেসির শৈশবের ক্লাব ওল্ড বয়েজেরও। সবমিলিয়ে ফুটবল নিয়েই ছিল মেসির ব্যস্ততা। কিন্তু তাতে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত হুমকি। স্ত্রী অ্যান্তোলা রোকুজ্জোর দোকানে হামলার পর তাকে হুমকি দিয়েছে মাদক কারবারিরা।

এ ঘটনার পর জন্মস্থান ও পিতৃভূমি রোজারিও’তে যাওয়া নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে মেসির। একইসঙ্গে শৈশবের ক্লাব নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন জাতীয় দলে মেসির সাবেক সতীর্থ। আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জ বর্তমানে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের কোচ। তার কাছে ক্লাবের সঙ্গে মেসির সম্পর্ক নিয়ে জানতে চাওয়া হয়।

ম্যাচে নামার আগে মেসিসহ ওল্ড বয়েজ ক্লাবের ফটোসেশন

ক্রীড়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মার্কা’য় হেইঞ্জের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে মেসির সাবেক সতীর্থ বলছেন, ‘এ ঘটনা সব মানুষের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এখানে কী চলছে। অবশ্যই এ ধরনের ঘটনা মেসিকে ক্লাব থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা এই বিষয়টা নিয়ে এখন কথা বলছি, কারণ এখানে মেসি জড়িত। কিন্তু অন্য অনেকেই আছে, যারা আর্জেন্টিনায় ফিরতে চায়।’

২০০৫ থেকে ২০১০ সাল—এ সময় মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন হেইঞ্জ। মেসির সাবেক এই সতীর্থ পুরো বিষয়টাকে দেখছেন পাগলামি হিসেবে, ‘সে আমাদের খেলোয়াড় বলে তাকে নিয়ে কথা বলছি, আমার সঙ্গে মেসির সম্পর্কটাও একটা কারণ। আসলে পুরো বিষয়টা একটি পাগলামি, এটা অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে।’

এর আগে বুধবার দিবাগত রাত ২টার (স্থানীয় সময়) দিকে রোজারিওতে রোকুজ্জোদের দোকানে এলোপাতাড়ি ১৪টি গুলি চালায় অজ্ঞাত দুই মোটরসাইকেল আরোহী। সে সময় দোকানের দরজা বন্ধ থাকলেও সেটি ভেদ করে ভেতরের গ্লাসও ভেঙে যায়। পরে হামলাকারীরা ঘটনাস্থলে একটি চিঠি ফেলে যান। সেখানে তারা মেসিকে হুমকি দিয়ে লেখেন, ‘মেসি আমরা তোমার অপেক্ষায় আছি। জাভকিন একজন মাদক চোরাকারবারি। সেও তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।’

আরও পড়ুন : ‘মেসির মা বলছেন, আমরা বন্দী জীবন কাটাব না’

পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে যে সেদিন মোটরসাইকেলে করে দুজন ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তাদের একজন বাইক থেকে নেমে নির্বিচারে (ব্লাইন্ড শট) গুলি ছুড়তে থাকেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় মেসির উদ্দেশে লেখা একটি চিরকুট।

জানা গেছে, ওই ঘটনাস্থলে মেসির শুশ্বর পরিবারের জায়গা রয়েছে। মেসির স্ত্রী রোকুজ্জোর চাচাতো ভাই সেই জায়গাটির তত্ত্বাবধান করেন। খেলোয়াড়ি জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে ছুটি পেলে মাঝেমধ্যে রোজারিওর সেই বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন মেসি। বিশেষ করে বড়দিনের ছুটিটা মেসি সেখানেই কাটান। তবে সেখানে জাভকিন নামের যার কথা বলা হয়েছে, তিনি ওই শহরের মেয়র। মেয়রের সঙ্গে মাদক কারবারিদের বিরোধ থাকার কারণে মেসিকে ব্যবহার করে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এতে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

এএইচএস