জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে চলতি মৌসুমে ৩০টি গোল এবং ২০টি অ্যাসিস্ট। কী দুর্দান্ত সময়ই না পার করছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। ১৯৮৬ সালের যে অর্জন কেউ ছিনিয়ে আনতে পারেননি সেটিই সম্ভব করেছেন তিনি। আরও একটি তারকা এঁকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সিকে মেসি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এরপর একে একে জিতেছেন গোল্ডেন বুট, ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কার। মেসির এ বছরটা পুরোপুরি রাঙাতে পারত ফরাসি ক্লাব পিএসজি। কিন্তু দলটির যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ভাগ্যই সঙ্গে নেই!

বুধবার (৮ মার্চ) দিনের শেষ সময়টা ছিল মেসির অবিস্মরণীয় বছরকে কিছুটা মেঘে ঢেকে দেওয়া রজনী। প্রথম লেগে পিছিয়ে থেকে জার্মানির মাটিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে নেমেছিলেন মেসি-এমবাপেরা। সমীকরণ ছিল দ্বিতীয় লেগে তাদের অবশ্যই জিততে হবে। কিন্তু মাঠে নেমে কার্যত তাদের পায়ে শিকল পরিয়ে দেয় বায়ার্ন মিউনিখের খেলোয়াড়রা। মেসিরা খোলস ছেড়ে বের হতে না পারায় ২-০ গোলে হেরেছে ধনকুবের নাসের আল খেলাইফির ক্লাব।

এতে টানা ১১ আসরের ব্যর্থতা নিয়েই ফিরেছে প্যারিসিয়ান জায়ান্টরা। এবারের আসর দিয়ে অবশ্য মেসির ব্যক্তিগত আক্ষেপও বেড়ে গেছে। টানা ৮ মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ব্যর্থতা উপহার দিয়েছে তাকে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি জিতেছিলেন মেসি। এরপর বার্সার হয়ে ৬ বার এবং পিএসজির জার্সিতে দু’বার ট্রফি থেকে বেশ দূরত্বের অবস্থান থেকে তিনি ফিরেছেন।

আরও পড়ুন : ‘যেখানে মেসির চেয়ে এগিয়ে রোনালদো’

এর আগে সংবাদমাধ্যম স্পোর্টকে দেওয়া এক মন্তব্যে মেসি জানিয়েছিলেন, ‘আমি শিরোপা জিততেই পিএসজিতে এসেছি, বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে।’

তবে এই টাইটেল জেতা যে খুব সহজ না সেটিও স্বীকার করেছেন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা। তিনি বলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা অবশ্যই অনেক কঠিন। যে কোনো ছোট্ট ঘাটতিও মুহূর্তেই লিগ থেকে ছিটকে দিতে পারে। আমাদের সেরা পারফর্ম দিয়ে যে সবসময় চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়, তাও নয়।’

৩৫ বছর বয়সেও মেসির শিরোপার তৃষ্ণা একটু কমেনি। কিন্তু পিএসজিতে আসার পর মেসি কখনো সর্বোচ্চ এ মঞ্চের দেখা পাননি। আরও পরিতাপের বিষয় হলো, চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই লেগের ম্যাচে পিএসজি সর্বশেষ গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিল ২৮ বছর আগে। এবারের মতো সেবারও দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলে হেরেছিল পিএসজি। তবে মেসি এভাবে এর আগে কখনোই টানা দুই আসরের নক-আউট থেকে বিদায় দেখেননি। কাতালান ক্লাবের হয়ে মেসি যতবারই খেলেছেন, ২০০৭ সাল বাদে প্রতিবারই কোয়ার্টার খেলেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তাই স্বভাবতই কথা উঠেছে, মেসির সোনালী সময় কী পিএসজিতে এসে শেষ হয়ে গেছে? বিশ্বকাপ জয়ের দুর্দান্ত বছরও যেন ম্লান করে দিচ্ছে পিএসজি!

এএইচএস