আর্জেন্টিনার নাগরিক হলেই কী দিয়েগো ম্যারাডোনা কিংবা লিওনেল মেসিকে আদর্শ (আইডল) মানতে হবে? অন্তত এ নীতি মানতে নারাজ দেশটির তরুণ ফুটবলার আলেজান্দ্রো গার্নাচো। সম্প্রতি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দুর্দান্ত ‘বাইসাইকেল কিকে’ গোল দেওয়ার পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে এই আর্জেন্টাইন। যার রেশ ধরে তার আদর্শ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এবং স্বদেশি মহাতারকা মেসির নামও সেসব আলোচনায় ওঠে আসছে। একইসঙ্গে মেসির সঙ্গে গার্নাচোর দূরত্বের বিষয়ও তুলে ধরেছেন সাবেক ম্যানইউ তারকা রিও ফার্দিনান্দ।

রেড ডেভিলদের হয়ে খেলা সাবেক এই ডিফেন্ডার দাবি করেছেন, আর্জেন্টিনার তরুণ ফরোয়ার্ড গার্নাচোকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসরণের (ফলো) তালিকায় রাখেননি মেসি। এর কারণ হিসেবে রোনালদোর প্রতি গার্নাচোর অতিমাত্রায় মুগ্ধতা এবং তাকে পছন্দের কথা অকপটে নিজের কথা ও আচরণে প্রকাশ করার বিষয়টিকে উল্লেখ করেন ফার্দিনান্দ। সম্প্রতি দৃষ্টিনন্দন গোলের পরও গার্নাচো রোনালদোর জনপ্রিয় ‘সিউ’র অনুকরণে উদযাপন করেন।

নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ভাইভ উইথ ফাইভ’ এ ফার্দিনান্দ জানান, ‘আপনারা জানেন আমি তার (গার্নাচো) কোন বিষয়টিকে পছন্দ করি? তা হচ্ছে— তার পছন্দের বিষয়ে কাউকে পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি। গার্নাচো আমাকে বলেছিল যে, রোনালদোকে পছন্দ করার বিষয়টিতে কোনো রাখঢাক না রাখায় মেসি তাকে আনফলো করে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তার কোনো আক্ষেপও নেই, সে জানায় ‘‘আমি রোনালদো-ম্যান’’। সবচেয়ে সেরা কে? রোনালদো। বিষয়টি সে মেসির সঙ্গে জাতীয় দলে খেলার সময়ও স্বীকার করতে ভোলেনি।’

ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট গোল ডটকম বলছে, সমর্থকরা ২০২২ সালের এপ্রিলে জানতে পারে যে মেসি গার্নাচোকে ফলো তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। ওই সময় রোনালদোর একটি ছবি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার দিয়ে তাকে উল্লেখ করেন     গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ (গোট) বলে। যদিও মেসিকেও আইডল বলে উল্লেখ করেছিলেন গার্নাচো। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পর গার্নাচো জাতীয় দলে তার সতীর্থ হয়ে উঠলেও তাদের সেই দূরত্ব থেকে গেছে।

সাবেক ম্যানইউ ডিফেন্ডার রিও ফার্দিনান্দ

সর্বশেষ গত রোববার (২৬ নভেম্বর) এভারটনকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ম্যানইউ ৩-০ গোলে হারায়। যেখানে গোল করেন গার্নাচো, অ্যান্থনি মার্শাল এবং মার্কাস রাশফোর্ড। তবে ইউনাইটেডের জয় ছাপিয়ে এদিন আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন গার্নাচো। মেসির দেশ আর্জেন্টিনায় জন্ম হলেও তিনি আদর্শ মানেন এলএমটেনের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদোকে। উদযাপনও করেন রোনালদোর চিরচেনা ভঙ্গিতে। ওইদিন গুডিসন পার্কেও যেন রোনালদোকেই খানিক মনে করিয়ে দিলেন গার্নাচো। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডিয়েগো দালোতের ক্রসটাও তার জন্য খানিক দূরেই ছিল। আবার উচ্চতাও ছিল কিছুটা বেশি। সাতপাঁচ না ভেবেই গার্নাচো উড়লেন শূন্যে। শরীরটাকে ভাসিয়ে যেমনভাবে গোল করলেন তাতে বিষ্মিত পুরো ফুটবল দুনিয়া।

তার এমন গোলকে ওয়েন রুনির করা বাইসাইকেল কিকের চেয়ে ওপরে রাখতে চান ফার্দিনান্দ, ‘আমি নিশ্চিত তার ভঙ্গিতে সারাবিশ্বের অনেক শিশুও গোল করার চর্চা করেছে। এমনকি আমার ছোট ছেলেও করেছিল একইভাবে, ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার দাঁতও ভেঙে গেছে। এই গোলটি রুনির চেয়েও বেটার। আমি দুঃখিত ওয়াজ্জা। গার্নাচো গোলটি থেকে বেশ দূরে ছিল, এমনকি অ্যাঙ্গেলেও। এরপর যা হলো যা অবিশ্বাস্য, শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্ত!’

এএইচএস