সতীর্থের ভালবাসা-শ্রদ্ধায় ফিরে এলো পামেলের স্মৃতি
আল মুসাব্বির সাদী/ফাইল ছবি
২০১১ সাল। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে আগে আজকের এ দিনে চলে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক ও বাফুফের প্রথম পেশাদার সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদী (পামেল)। প্রায় দুই দশক ক্রীড়া সাংবাদিকতা করার পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ফুটবল নিয়ে ছিল অনেক ভালোবাসা ও স্বপ্ন। ফুটবল ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার দেড় বছরের মধ্যেই শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়েন। ক্যান্সারের সঙ্গে কয়েক মাস লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ২০ মে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান।
ওপারে পামেলের ইতোমধ্যে ১০ বছর হয়ে গেছে! ফুটবল ফেডারেশনে পামেলের পদে স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আবু নাঈম সোহাগ। বছর দেড়েক তাকে কাছ থেকে দেখেছিলেন বাফুফের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। তার দৃষ্টিতে সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদী, ‘কাজের প্রতি খুবই দরদী ছিলেন। সাংবাদিকতা থেকে ফুটবল ব্যবস্থাপনায় আসলেও খুব দ্রুত তিনি মানিয়ে নিয়েছিলেন সব কিছু। অনেক সময় অনেক জটিল বিষয় এত সুস্থির ভাবে সমাধান করতেন সেটা ছিল শেখার মত। সব কিছুর ঊর্ধ্বে ছিল ফুটবল ভালোবাসা। অসম্ভব ভালো বুঝতেন ফুটবলকে।’
বিজ্ঞাপন
ফুটবলকে ভালোবাসায় নিয়তি হয়তো তাকে এখানে এনেছিল। না হলে তিনি হতে পারতেন চিকিৎসক। মেডিক্যালে ভর্তি হয়ে এক বছর পড়াশোনা করার পর ছেড়ে দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে ক্রীড়া সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। তার সাংবাদিকতার অধিকাংশ সময় ডেইলি স্টারে কাটলেও শুরুটা হয়েছিল দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টে। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের ক্রীড়া সম্পাদক ও বর্ষীয়ান সাংবাদিক মন্জুরুল হক পামেল সম্পর্কে বলেন, ‘অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। সাংবাদিক হিসেবেও ছিলেন চৌকস।’
পামেল ইংরেজি পত্রিকায় ও ফুটবল নিয়ে বেশি কাজ করলেও বাংলা এবং ক্রিকেটও ছিল তার দখল। প্রথম আলোতে সাপ্তাহিক পাতায় ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ে লিখতেন। এবং তার দুটি বই আবার ক্রিকেট নিয়ে, ‘শচীন টেন্ডুলকারের বেড়ে ওঠা’ ও ‘ব্রায়ান লারার আত্মজীবনী।’
বিজ্ঞাপন
দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কোচ সাইফুল বারী টিটু আল মুসাব্বির সাদীকে সাংবাদিক ও সাধারণ সম্পাদক উভয় ভুমিকায় দেখেছেন। দেশের অন্যতম ফুটবল বিশ্লেষকের দৃষ্টিতে, ‘পামেল ভাইয়ের ম্যাচ বিশ্লেষণ ক্ষমতা অসাধারণ ছিল। ফুটবল প্রশাসনেও তিনি ভালো দক্ষতা দেখিয়েছেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।’
মা, স্ত্রী, ২ ছেলে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে পামেল ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন বছর দশেক। বাংলাদেশের ফুটবল ভালো চললে হয়তো অন্য ভুবনে থেকেও স্বস্তি পাবেন পামেল!
এজেড/এটি