দুয়ারে চলে এসেছে আরেকটা ইউরো। এইতো আর মাত্র ক’দিন পরেই পর্দা উঠবে ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরের। ২৪ দলের এই লড়াইয়ের নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী ও তথ্যবহুল লেখা প্রকাশিত হচ্ছে ঢাকা পোস্টে। আজ থাকছে ‘বি’ গ্রুপ নিয়ে আলোচনা-

ভালো ছাত্র। ক্লাসে পড়া ধরলেই আগে ওঠে তার হাত, সেশনাল সব পরীক্ষাতেও থাকে সবার আগে, কিন্তু মূল পরীক্ষা এলেই কী যেন কী হয়ে যায়! সবার শিক্ষাজীবনেই এমন দুয়েকজনের দেখা মিলেছে আমাদের সবার, ভাগ্য খারাপ থাকলে নিজেরাই ছিলাম এমন কেউ। সাম্প্রতিক ফুটবলে এমন দলটা যেন বেলজিয়াম। 

শেষ কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি। কেভিন ডি ব্রুইনা, এডেন হ্যাজার্ড আর রোমেলু লুকাকুদের নিয়ে গড়া ‘সোনালী প্রজন্ম’-এর বেলজিয়াম বেশ অনেকদিন ধরেই আছে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও। কিন্তু শিরোপা ধরা দেয়নি এখনো। দীর্ঘদিনের ‘শিক্ষক’ রবার্তো মার্টিনেজের অধীনে সে খরা কি মিটবে এবার? ভালো ছাত্র কি এবার নাম্বার ওয়ান হবে? রাশিয়া, ডেনমার্ক, আর ফিনল্যান্ডকে নিয়ে গড়া গ্রুপ ‘বি’ থেকে কাজটা অবশ্য অতটা সোজাও হতে যাচ্ছে না বেলজিয়ামের।

বেলজিয়াম

বাছাইপর্বে ৪০ গোলের বিপরীতে তিনটে হজম, বিশ্বকাপে তৃতীয় সেরা দল, র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান... সঙ্গে যখন যোগ হবে কোচ রবার্তো মার্টিনেজের বহুল চর্চিত ৩-৪-২-১ ছক, আর পরীক্ষিত ও গুণমানসম্পন্ন স্কোয়াড, তখন এমন দলকে ফেভারিট না বলেই পারা যায় না। বেলজিয়ামের দলটাও এবার ফেভারিটই। তবে মূল দুই তারকা এডেন হ্যাজার্ডের ছন্দহীনতা আর কেভিন ডি ব্রুইনার চোট বড়সড় দুর্ভাবনাই উপহার দিচ্ছে কোচ রবার্তো মার্টিনেজকে।  

সূচি- প্রতিপক্ষ রাশিয়া, ১২ জুন; প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক, ১৭ জুন; প্রতিপক্ষ ফিনল্যান্ড, ২১ জুন।

যেভাবে ইউরোয়-

বাছাইপর্বের আই গ্রুপ থেকে দশ ম্যাচের দশটাতেই জিতেছে বেলজিয়ানরা। প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছে ৪০ গোল। বাছাইতে সবচেয়ে বেশি গোলের কৃতিত্বটাও তাদেরই।

আগের ইউরোয় যেমন খেলেছে-কোয়ার্টার ফাইনাল।

সেরা সাফল্য-রানার্স আপ (১৯৮০)

ফিফা র‍্যাঙ্কিং-

ডাগ আউটে যিনি-রবার্তো মার্টিনেজ।

তারকাদের ছন্দহীনতা আর অনুপস্থিতিতে নজর কাড়তে পারেন লুকাকু/অল ফুটবল

চোখ রাখবেন যার ওপর-রোমেলু লুকাকু। দুই প্রধান তারকার সেরাটা পাওয়া নিয়ে আছে সংশয়। তবে তাদের ছন্দহীনতা আর অনুপস্থিতিতে নজর কাড়তে পারেন লুকাকু। ইন্টার মিলানের হয়ে সদ্যসমাপ্ত মৌসুমে করেছেন ২৪ গোল, আর দলকে জিতিয়েছেন সিরি’আ। তার এই পারফর্ম্যান্স ইউরোয়ও ধরে রাখতে পারলে তিনি হয়ে উঠতে পারেন বড় ভরসার নাম। চোখ রাখতে পারেন য়ুরি তিয়েলেমান্সের ওপরও। ডি ব্রুইনার চোট যদি শেষমেশ তাকে না-ই নামতে দেয় মাঠে, তবে প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে ‘আন্ডাররেটেড’ মিডফিল্ডার তিয়েলেমান্স কেড়ে নিতে পারেন পাদপ্রদীপের আলো।

শক্তিসামর্থ্য- দলটার সবচেয়ে বড় শক্তি দলের আক্রমণভাগ। শুধু ডি ব্রুইনা, লুকাকু আর ড্রাইস মের্তেন্সই দলের আক্রমণকে ভীতিজাগানিয়া করে তুলেছেন, বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। বেঞ্চ থেকে উঠে এসে হ্যাজার্ড যদি নিজের ছন্দহীনতাকে ঝেড়ে ফেলতে পারেন, তাহলে আরও ভীতি যে প্রতিপক্ষে ভর করবে তা বলাই বাহুল্য। ১৯ বছর বয়সী জেরেমি ডকুও কাড়তে পারেন আলো।

দুর্বলতা-লেফট ফুটেড সেন্টার ব্যাক। দলের ডান পায়ের সেন্টারব্যাক অপশনগুলো ভালো হলেও কোচ মার্টিনেজকে ভাবনা উপহার দিতে পারে দলটির বাম পায়ের সেন্টারব্যাকরা। এ জায়গায় থাকা দুই ডিফেন্ডার হলেন ইয়েন ভেরটঙ্গেন ও থমাস ভারমায়লেন, যাদের দুজনের বয়সই ছাড়িয়ে গেছে ৩৫ বছর। বেলজিয়ামের বড় অ্যাকিলিস হিল হয়ে উঠতে পারে দলটির এ জায়গাটা। 

সম্ভাব্য একাদশ- 
৩-৪-৩ ছকে,
কোর্তোয়া;
অল্ডারভেইরেল্ড, ডেনেয়ের, ভেরটঙ্গেন;
মিউনিয়ের, তিয়েলেমান্স, ডেনডঙ্কের, থর্গান হ্যাজার্ড;
মের্তেন্স, লুকাকু, ডি ব্রুইনা।

ডেনমার্ক

ডার্ক হর্স হওয়ার রসদ আছে যেসব দলের, ডেনমার্ক তাতে থাকবে নিশ্চিতভাবেই। শেষ ১২ মাসে দলের শক্তপোক্ত রক্ষণ আর দ্রুত আক্রমণে ওঠার স্বভাব দলটাকে এ কাতারে তুলে এনেছে।

সূচি- প্রতিপক্ষ ফিনল্যান্ড, ১২ জুন; প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম, ১৭ জুন; প্রতিপক্ষ রাশিয়া, ২১ জুন।

যেভাবে ইউরোয়- সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপ ডি তে ছিল ডেনমার্ক। সেখানে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে দলটা এসেছে ইউরোয়। তাতে ইউরো স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের।

আগের ইউরোয়-সুযোগ পায়নি।

সেরা সাফল্য-চ্যাম্পিয়ন ১৯৯২

ফিফা র‍্যাঙ্কিং-১০

কোচ-ক্যাসপার হিউলমান্ড।

গোলমুখে ডেনমার্কের অতন্দ্র প্রহরী ক্যাসপার স্মাইকেল/লেস্টার সিটি

চোখ রাখবেন যার ওপর-ক্যাসপার স্মেইকেল। বাবা পিটার স্মেইকেল তার কিংবদন্তিটাকে যেখানে ছেড়ে গিয়েছিলেন, ক্যাসপার যেন সেখান থেকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেটা। গেল বিশ্বকাপে একাই প্রায় কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়েই যাচ্ছিলেন ডেনমার্ককে। সেই দলটা এখন আরও অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ, গুণমানসম্পন্ন। এবার যেতে পারেন আরও দূরে।

শক্তিসামর্থ্য- বেলজিয়ামের মতো তাদেরও শক্তির জায়গাটা আক্রমণভাগ। মার্টিন ব্র্যাথওয়েট বার্সেলোনার হয়ে বেশ কার্যকরী পারফর্ম্যান্স দিয়েছেন, ইউসুফ পোলসেনও তার দল লাইপজিগের হয়ে। অফ দ্য বলেও শেষজন বেশ কর্মঠ, আছে ডেনমার্কের হয়ে ভালো গোলস্কোরিং রেকর্ডও। ক্যাসপার ডলবার্গ আর আন্দ্রেস কর্নেলিয়াস নিজেদের ক্লাবের হয়ে ফর্মে না থাকলেও জাতীয় দলের হয়ে বেশ ভালো পারফর্মার। সব মিলিয়ে দলের দূর যাত্রার ট্রাম্পকার্ড এই আক্রমণভাগই।

দুর্বলতা- দুই সেন্টারব্যাক। আন্দ্রেস ক্রিশ্চেনসেন আর সিমন কাইয়ের আছেন দলের সেন্টারব্যাক হিসেবে। ক্রিশ্চেনসেন ভালো ডিফেন্ডার, তবে সেটা ৩ জনের ব্যাকলাইনের ক্ষেত্রে, ফোর ম্যান ডিফেন্সের ক্ষেত্রে তার নড়বড়ে ভাবটা চোখে পড়ার মতো। এদিকে সিমন কাইয়ের বেশ ভালো ডিফেন্ডার হলেও অযথা ফাউল করতে জুড়ি নেই তার। যার ফলে এ জায়গাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের সবচেয়ে বড় ভাবনার কারণ হিসেবে।

সম্ভাব্য একাদশ-
৪-২-৩-১ ছকে,
স্মেইকেল;
ওয়াস, কাইয়ের, ক্রিশ্চেনসেন, মায়েহল;
হয়বিয়ের, ডেলানি;
পোলসেন, এরিকসেন, ব্র্যাথওয়েট;
উইন্ড।

রাশিয়া

গেল বিশ্বকাপে দারুণ এক প্রদর্শনীই নামিয়ে দিয়েছিল রাশানরা। তবে সেটা ছিল নিজ দেশে, চেনা পরিবেশে। ইতিহাসে এই প্রথমবার প্যান ইউরোপিয়ান এই টুর্নামেন্টে সেটা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ তো আছেই, আধুনিক রাশিয়া হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিদেশের মাটিতে ভালো পারফর্ম করতে না পারার দুর্নাম মোচনের পরীক্ষাও অপেক্ষা করছে দলটির জন্য। তবে সে পরীক্ষায় উতরে যেতে পারবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাব নিহিত আছে কোচ চেরচেশভ তার তারুণ্যে ভরা মাঝমাঠকে কী করে কাজে লাগান তার ওপর।

সূচি- প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম, ১২ জুন; প্রতিপক্ষ ফিনল্যান্ড, ১৬ জুন; প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক, ২১ জুন। 

যেভাবে ইউরোয়- বেলজিয়ামের গ্রুপ থেকে রানার্স আপ হয়ে এসেছে দলটি। এক বেলজিয়ামকে ছাড়া হারিয়েছে বাকি চার দলকেই।

ইউরো ২০১৬-এ – গ্রুপপর্ব

সেরা সাফল্য– ১৯৬০ (চ্যাম্পিয়ন, সোভিয়েত ইউনিয়ন হিসেবে)

ফিফা র‍্যাঙ্কিং-৩৮

কোচ-স্তানিসলাস চেরচেশভ।

রাশানদের অজস্র আক্রমণের উৎস মারিও ফের্নান্দেজ/গোল ডট কম

চোখ রাখবেন যার ওপর-আর্তেম জিউভা বা দেনিস চেরিশেভদের ভিড়ে আপনাকে বিশেষভাবে চোখ রাখতে হবে মারিও ফের্নান্দেজের ওপর। রাশিয়া বিশ্বকাপে দলের আক্রমণের বড় যোগানটা এসেছে তার থেকে। বিষয়টা বদলাবে না এ ইউরোতেও।

শক্তিমত্তা- দলটার মাঝমাঠে তরুণ প্রাণের প্রাচুর্য্যই দলটার শক্তির জায়গা। টানা খেলায় থাকা ইউরোপীয় মৌসুম শেষে হচ্ছে এই টুর্নামেন্ট। এখানেই তারুণ্যের ছড়াছড়ি আর অফুরান প্রাণশক্তি রাশানদের দেবে বাড়তি সুবিধা। মাঝমাঠে প্রথাগত ডাবল পিভোট তো বটেই, চাইলে ম্যাচ পরিস্থিতি বিচারে তিনজনকে নিয়ে হোল্ডিং আর সেন্ট্রাল মিডফিল্ড মিলিয়ে ট্রিভোটও খেলাতে পারেন কোচ চেরচেশভ, এতটাই স্কোয়াড গভীরতা তার হাতে।

দুর্বলতা-রাশিয়ার বাইরে পারফর্ম করার ক্ষমতা কিছুটা পিছিয়ে রাখছে দলটাকে। ইতিহাস বলছে, দল যতই ভালো হোক, রাশিয়ার বাইরের টুর্নামেন্টে বরাবরই পারফর্ম করতে ব্যর্থ রাশানরা। প্যান ইউরোপিয়ান এই টুর্নামেন্টে তাই ভালো চ্যালেঞ্জই থাকবে চেরিশেভদের।

সম্ভাব্য একাদশ-
৪-২-৩-১ ছকে,
শুনিন;
ফের্নান্দেজ, সেমেনভ, জিকিয়া, জিরকভ;
অজদয়েভ, গলভিন;
চেরিশেভ, মিরানচুক, জেমালদিনভ;
জিউভা।

ফিনল্যান্ড

’১৬ ইউরোয় যা করেছিল আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড কি এবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে? এখন পর্যন্ত কিন্তু পটভূমিটা মিলে যাচ্ছে। ফুটবলীয় সামর্থ্যের জন্য খুব একটা পরিচিত নয়, জনসংখ্যা কম, সেই দলটাই ইতিহাসে প্রথমবার খেলতে এসেছে ইউরোয়। এবার প্রশ্ন, স্ক্যান্ডিনেইভিয়ান সেই দেশটির কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার কীর্তি কি নর্ডিক এই দেশ গড়ে দেখাতে পারবে? 

সূচি- প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক, ১২ জুন; প্রতিপক্ষ রাশিয়া, ১৬ জুন; প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম, ২১ জুন।

যেভাবে ইউরোয়- জে গ্রুপে অবিসংবাদিত সেরা ছিল ইতালি। সেই গ্রুপ থেকে রানার্স আপ হয়ে ফিনিসরা এসেছে মূল পর্বে।

২০১৬ ইউরোয়- সুযোগ পায়নি

সেরা সাফল্য- নেই

র‍্যাঙ্কিং- ৫৪

কোচ- মারকু কানেরভা

প্রিমিয়ার লিগের মতো তেমু পুকি আলো কাড়তে পারেন ইউরোতেও/গোল ডট কম

চোখ রাখবেন যাদের ওপর- তেমু পুকি। ফ্যান্টাসি প্রিমিয়ার লিগ খেলে থাকলে নামটা মোটেও আপনার কাছে অপরিচিত ঠেকার কথা নয়। ২০১৯-২০ মৌসুমে শুরুতে ধারাবাহিক গোল করে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন। সদ্যসমাপ্ত মৌসুমের আগে দল নেমে গিয়েছিল চ্যাম্পিয়নশিপে, তবে নিজের ধারটা ঠিকই ধরে রেখেছেন পুকি, করেছেন ২৬ গোল, দলকে তুলেছেন প্রিমিয়ার লিগে। সেই পুকিতেই এবার জিইয়ে থাকবে ফিনল্যান্ডের আশা।

শক্তিমত্তা- দলীয় বোঝাপড়া। একটা বড় সময় ধরে দলটা আছে একসঙ্গেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে বেশ কিছু তরুণ খেলোয়াড়। ঠাসবুনটের সূচিতে যখন অবসাদ ঘিরে ধরবে অন্যদের, তখনো দলটাকে চনমনে রাখতে সাহায্য করবে বিষয়টা।

দুর্বলতা-আক্রমণে বৈচিত্রের অভাব। রক্ষণে সেঁধিয়ে বসে থেকে সুযোগ পেলেই আক্রমণ। সাধারণত এই থাকে দলের কৌশল। ৩-৪-৩ ছকটা তখন আদতে কাজ করে ৫-২-৩ ছক আকারে। বড় দলের বিপক্ষে এটা খুবই কার্যকরি একটা উপায়, তবে ইউরোয় যখন বেশিরভাগ দলই খেলে ‘বাসপার্ক’ আর প্রতি আক্রমণের কৌশলে, তখনই প্রশ্নের মুখে পড়ে এ কৌশল। আর যদি ফিনল্যান্ডকে একটা গোল কোনোক্রমে দিয়ে দেওয়া যায়, এরপরের আক্রমণের একমুখী প্রতি আক্রমণনির্ভর স্বভাব আর ম্যাচে ফিরতে দেয় না। এবারের টুর্নামেন্টে সেই আইসল্যান্ড হতে হলে কোচ কানেরভাকে খুঁজে পেতে হবে এর সমাধান।

সম্ভাব্য একাদশ
৩-৪-৩ ছকে,
রাডেকি;
ইভানোভ, রাইতালা, অশানেসি;
সোয়ারি, কামারা, স্পার্ভ, ইউরোনেন; 
লাপালাইলেন, পুকি, ফরস।

এনইউ/এটি