ব্রাজিলিয়ানের গোলও ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগে’ নিতে পারেনি বসুন্ধরাকে
রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গেই মালদ্বীপের মালে স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস শিবিরে হতাশ মুখের ছড়াছড়ি। তাদের গত দুই বছরের স্বপ্ন ছিল দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়ে আঞ্চলিক সেমিফাইনাল খেলার। সেই স্বপ্ন অল্পের জন্য হাতছাড়া হলো। আজ (মঙ্গলবার) এএফসি কাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে ভারতের ক্লাব মোহনাবাগানের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র করে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা।
অথচ মালদ্বীপের মালেতে মঙ্গলবার এই ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পেত। দেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ ছিল কিংসের। এখন অনেক যদি কিন্তুর উপর নির্ভর করছে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে অফ খেলা।
বিজ্ঞাপন
চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদী, তেমনি বসুন্ধরা কিংসের দুঃখ এএফসি কাপ। টুর্নামেন্টটির দক্ষিণ এশিয়ান জোনের সেরা হওয়ার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের ক্লাবটির। গত বছর করোনার জন্য এএফসি কাপ বাতিল হয়। এবার এএফসি কাপ খেলতে মালদ্বীপ যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসে বসুন্ধরা কিংস। এরপর সূচিও পরিবর্তন হয়েছে দুই দফা। এএফসি কাপে এবার শেষ ম্যাচে দরকার ছিল জয়ের। সেই জয়ের জন্য প্রথমে গোল করেছিল কিংস, পরবর্তীতে লাল কার্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয়, ১০ জন হওয়ার পরও কিংসের একটি আক্রমণ পোস্টে লেগে ফেরত আসে। সব মিলিয়ে অনেকটা দুর্ভাগ্যের শিকার বাংলাদেশের ক্লাবটি।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না বসুন্ধরা কিংসের। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বসুন্ধরা। ২৮ মিনিটে লিডও নেয় বসুন্ধরা। বক্সের মধ্যে দারুণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল জালে পাঠান কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোনাথন ফার্নান্দেজ।
বিজ্ঞাপন
তার দুর্দান্ত গোলে কিংসের ডাগ আউটে আনন্দে মেতে উঠে। বাংলাদেশে থাকা ফুটবলপ্রেমীরাও আশায় বুক বাধতে থাকেন। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে ব্যাকফুটে যায় বসুন্ধরা। ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা একটি ট্যাকেল রেফারি বেশি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে সরাসরি লাল কার্ড দেখান। প্রথমার্ধে বসুন্ধরা এক গোল লিড নিয়ে গেলেও দশ জনে পরিণত হওয়ায় সামগ্রিকভাবে ব্যাকফুটে থাকে।
মোহনবাগানকে এই গ্রুপের টপ ফেভারিট ভাবা হয়েছিল। আজ কিংসের বিরুদ্ধে মোহনবাগান নেমেছিল তাদের গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি ছাড়াই। মোহনবাগানের শক্তিমত্তার সঙ্গে কিংসের খুব বেশি পার্থক্য দেখা যায়নি। কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো এই ম্যাচেও দুর্দান্ত খেলেছেন। তিনি কয়েকটি দারুণ সেভ করেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধে দশ জন নিয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলা শুরু করে। সেই ধারা বেশিক্ষণ বজায় রাখতে পারেনি অস্কারের শিষ্যরা। ৬৮ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে ভারতের ক্লাবটি। বক্সের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করেন মোহনবাগানের ফরোয়ার্ডরা। কিংসের ডিফেন্ডাররা ফরোয়ার্ডদের ঠিক মতো মার্কিং করতে পারেননি।
ম্যাচের বাকি সময় দুই দলই গোলের চেষ্টা করেছে। ৮৪ মিনিটে কিংসের ব্রাজিলিয়ান রবসনের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। সেখানেই কিংসের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। ইনজুরি সময় পাচ মিনিটে কিংস গোলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
এজেড/এমএইচ/এটি