বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজন/এএফসি

স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনকে বসুন্ধরা কিংস রাখছে কি? ফুটবলাঙ্গনে অন্যতম কৌতুহল এ নিয়ে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে দুই লিগ, দুই ফেডারেশন ও একটি স্বাধীনতা কাপ ট্রফি দিলেও এএফসি কাপে ব্যর্থ হয়েছেন অস্কার। 

বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষের স্বপ্নই ছিল দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ক্লাব হওয়ার। এজন্য অত্যন্ত উচু মানের বিদেশি, দেশীয় সব তারকা, উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা সবই দিয়েছিল অস্কারকে। বাংলাদেশ ছাড়ার আগে অস্কার গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও শেষ পর্যন্ত মোহনবাগানের চেয়ে দুই পয়েন্ট পেছন থেকে এএফসি কাপের যাত্রা শেষ করেছে। 

অস্কার-কিংস ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রিমিয়ার লিগের তিনটি ম্যাচ রয়েছে। সেই তিন ম্যাচ শেষে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’। বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে এই স্প্যানিশ কোচের চুক্তি চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেপ্টেম্বরে লিগ শেষ হওয়ার পর সেই অর্থে এই বছর আর তেমন কোনো প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কম। দলবদল সম্পন্ন করে আগামী মৌসুমের খেলা শুরু হতে হতে ডিসেম্বরের শেষভাগ। ফলে কিংসের কোচ হিসেবে অস্কার থাকবেন কিনা এই সিদ্ধান্ত সেপ্টেম্বরই হবে। এই প্রসঙ্গে কিংসের সভাপতি বলেন,‘লিগের ম্যাচ শেষে আমরা সামগ্রিক পারফরম্যান্স, পারিপার্শ্বিকতা সহ সব বিষয় মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেব।’

অস্কার ব্রুজনের মতো বিদেশিদের নিয়েও লিগ শেষে সিদ্ধান্ত নেবে কিংস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে চার জন বিদেশি কোটা। বসুন্ধরা কিংসে খেলছেন দুই জন ব্রাজিলিয়ান রবসন, জোনাথন, আর্জেন্টাইন বেসেরা ও ইরানিয়ান খালিদ শাফি। বিদেশিদের নিয়ে সভাপতির মূল্যায়ন, ‘রবসন নিঃসন্দেহে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। তাকে রাখার চেষ্টা করা হবে। শাফিও রক্ষণে তার সেরাটা দিয়েছে। চার জনের মধ্যে দুই জনে পরিবর্তন আসতে পারে।’ 

রাউল বেসেরাকে কিংস রাখছে না এটা নিশ্চিতই বলা যায়। জোনাথন ফার্নান্দেজ গোল করার পাশাপাশি গোলে সহায়তাও করেছেন। লিগ শেষে কোচের মতো বিদেশিদের নিয়েও সিদ্ধান্তে উপনীত হবে কিংস।

জাতীয় দল ১০ সেপ্টেম্বর কিরগিজস্তান থেকে দেশে ফিরলে বসুন্ধরা কিংসের বাকি তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বাকি তিন ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ঢাকা আবাহনী, সাইফ স্পোর্টিং ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। 

২০১৮ সাল থেকে বসুন্ধরা কিংসে কাজ করছেন অস্কার। গত তিন বছরে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে অত্যন্ত উঁচু মানের বিদেশি পেয়েছেন এই স্প্যানিশ কোচ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তাকে গত দুই বছরে সেই অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হয়নি। তবু বাংলাদেশের শীর্ষ কোচ মারুফুল হকের কাছে তিনি হেরেছেন দুই বার। দুর্বল বাজেটের দল নিয়েও মারুফ অস্কারের দলের সঙ্গে জিতেছেন দুই বার। 

এএফসি কাপে দক্ষিণ এশিয়ান জোনের গ্রুপ পর্ব ছিল অস্কারের নিজেকে প্রমাণের বড় জায়গা। সেই জায়গায় তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে বিতর্কিত লাল কার্ড ইস্যু থাকলেও অস্কারের কৌশল ও পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বেশ। দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ক্লাব হওয়ার স্বপ্ন ছিল বসুন্ধরা কিংসের। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি বাংলাদেশের ক্লাবটির। চীনের দুঃখ হোয়াংহো নদী। তেমনি এখন বলা যায় বসুন্ধরা কিংসের দুঃখ এএফসি কাপ। 

এজেড/এনইউ