পেরুর বিপক্ষে রেকর্ড গড়া ম্যাচে নেইমার/রয়টার্স

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আগের ম্যাচের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একরাশ ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন নেইমার। সেটা আবারও হলো, এবার আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নয়। ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়েই বলে ফেললেন মনের কথাটা।

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেইমারের দল অবশ্য ছুটছে অদম্য গতিতে। নেইমার নিজেও কম যান কীসে! সবশেষ আজ সকালে নিজেদের মাঠে পেরুর বিপক্ষে খেলেছে ব্রাজিল। জিতেছে ২-০ ব্যবধানে, তুলে নিয়েছে টানা অষ্টম জয়। গোল যে দুটো হলো, তার দুটোতেই সরাসরি অবদান রেখেছেন পিএসজি তারকা। প্রথমটা করিয়েছেন সতীর্থ এভারটন রিবেইরোকে দিয়ে, পরেরটা করেছেন নিজে। 

নিজে গোলটা করে গড়ে ফেলেছেন একটা রেকর্ডও। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তার গোল এখন ১২টি। রোনালদো নাজারিও, রোনালদিনহো, রোমারিও, সক্রেটিস, জিকোদের মতো খেলোয়াড়রা খেলে গেছেন ব্রাজিলের জার্সিতে, তাদের বাছাইপর্বের গোলসংখ্যাও তো এতো নয়। সেলেসাওদের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ গোল এখন নেইমারেরই।

তার ওপর সামগ্রিক হিসেবেও নেইমার করে ফেলেছেন তার ৬৯তম গোলটি। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ গোল করা পেলের রেকর্ডটাও হয়তো ছুঁয়ে ফেলবেন কোনো এক সময়। মাত্র ৯ গোলেরই তো ব্যাপার। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফর্মটা ধরে রাখতে পারলেই তো কেল্লাফতে!

এতকিছুর পরও নেইমারের প্রতি ব্রাজিলিয়ানদের খেদের যেন কমতি নেই। কারণটা অবশ্য মাঠের বাইরের ‘অনিয়ন্ত্রিত’ জীবন, আর মাঠে অযথা বিবাদে জড়িয়ে যাওয়া। তাতে কী, রেকর্ড তো গড়েই যাচ্ছেন! সেজন্যেই নেইমারের কণ্ঠে ঝরে পড়ল আক্ষেপ। বললেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না। আর কী করলে ভক্ত-সমর্থকরা নেইমারকে ভালোবাসবে, সম্মান দেবে? সেলেসাও জার্সি গায়ে আমাকে আর কী করতে হবে!’  

ঝাঁজটা অবশ্য মাঠেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। গোল যখন করলেন, উদযাপনটা হলো ভিন্নতর। জার্সি তুলে পেটটা দেখালেন, সেটা যে শেষ কিছু দিনে তার ভুঁড়ি নিয়ে সমালোচনারই জবাব ছিল, তা বলাই বাহুল্য।

এমন সব সমালোচনা আর সহ্য হচ্ছে না নেইমারের। ব্রাজিল প্রাণভোমরার ভাষ্য, ‘এ অবশ্য নতুন কিছু নয়, বহুদিন ধরেই তো দেখছি। আপনারা যারা সাংবাদিক আছেন, ধারাভাষ্য দিচ্ছেন, সবাই মিলেই তো করছেন সব! এ কারণেই তো আমি এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে চাই না!’ 

উত্তর অবশ্য একটা আছে বৈকি! রেকর্ড পাঁচ বারের বিশ্বকাপ জয়ী দেশ ব্রাজিল। তাদের মন কি আর ব্যক্তিগত সব সাফল্যে ভরে? নেইমারের এতসব কীর্তির পরও বিশ্বকাপটা যে চার আসর ধরে অধরা! এ প্রশ্নের উত্তর তাই বেশ সোজা, একটা বিশ্বকাপ। তাহলে যদি মন ভরে ব্রাজিলিয়ানদের, নেইমার পান ‘প্রাপ্য’ সম্মান!

এনইউ