সপ্তম ব্যালন ডি’অর জিতে যেন স্বস্তি নেই লিওনেল মেসির। দিগ্বিদিক থেকে ধেয়ে আসছে সমালোচনা, সাধারণ ফুটবল দর্শক থেকে শুরু করে খেলোয়াড় আছেন এ তালিকায়। সবশেষ সে তালিকায় যোগ দিয়েছেন খোদ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোও।

এরই মাঝে বিতর্কের আগুনে যেন আরেকটু হাওয়া দিলেন মেসির বাবা হোর্হে মেসি। ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন ছেলের ব্যালন ডি’অর বিজয়ের ছবি। সঙ্গে যোগ করে দিয়েছেন তীর্যক এক মন্তব্য। তাতেই শুরু হয়ে গেছে আলোচনার ঝড়। রোনালদো কাণ্ডের জবাবই বুঝি দিলেন মেসির বাবা?

গত সোমবার রাতে চলতি বছরের ব্যালন ডি’অর বিজেতার নাম ঘোষণা করা হয়। ৬১৩ ভোট পেয়ে মেসি বনে যান চলতি বছরের সেরা খেলোয়াড়, ইতিহাসের সর্বোচ্চ সপ্তম বারের মতো এ পুরস্কার জেতেন তিনি। দ্বিতীয় হন রবার্ট লেভান্ডভস্কি, তিনি ভোট পান ৫৮০টি। জর্জিনিও, কারিম বেনজেমা, এনগোলো কান্তেরা হন যথাক্রমে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো জায়গা পান সেরা পাঁচের বাইরে, ষষ্ঠ অবস্থানে। 

এ পুরস্কার ঘোষণা করার পরেই সূচনা আলোচনা সমালোচনার। যদিও তার সবই এসেছে মেসির ‘শত্রু ডেরা’ থেকে। সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস প্রশ্নই তুলে বসেছিলেন ব্যালন ডি’অরের প্রক্রিয়া নিয়ে। এরপর এতে যোগ দেন বায়ার্ন মিউনিখ ফরোয়ার্ড থমাস মুলার, রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার টনি ক্রুসরা। 

খেলোয়াড়রাই যেখানে সমালোচনা করছেন প্রকাশ্যে, তখন সাধারণ ফুটবল দর্শকরা তো এতে যোগ দেবেনই। বুধবার সকালে তেমনই একজন ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন মেসিকে হেয় করে। 

সিআরসেভেন.ও লিনার্দিও নামের সেই অ্যাকাউন্টে করা বিশাল পোস্টে মেসিকে নিয়ে লেখা হয়, ‘কে পুরস্কারটা জিতল? মেসি। যে বার্সেলোনার হয়ে কেবল কোপা দেল রে শিরোপা জিতেছে। রোনালদো যাওয়ার পর থেকে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গোলও করতে পারেনি সে। এরপর মৌসুমের বড় ম্যাচগুলোতে অদৃশ্য হয়ে গেছে।’ 

মেসির এবারের ব্যালন ডি অর জেতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল কোপা আমেরিকা জয়ের। সেটিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় ওই পোস্টে, ‘কোপা আমেরিকা জিতেছে যেটা প্রতি চার বছরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন প্রতি বছর হচ্ছে। ফাইনাল ও সেমিফাইনালেও কোনো গোল করতে পারেনি। এরপর এখন পিএসজির হয়ে ব্যক্তিগতভাবে বাজে মৌসুম কাটাচ্ছে।’

সে পোস্টে রোনালদোর চলতি বছরের অর্জনগুলোও তুলে ধরা হয়। দাবি করা হয়, চলতি বছরের পুরস্কারটা মেসির নয়, পাওনা ছিল রোনালদোরই। সেই পোস্টেই পাওয়া যায় পর্তুগিজ তারকার উপস্থিতি। নিজের ভেরিফাইড ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি সেখানে দিয়েছেন লাইক, করেছেন মন্তব্যও। তিনি লিখেছেন, ‘Factos’। যার অর্থ হলো ‘এটিই তথ্য’। সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন একটি লাইক ও একজোড়া চোখের ইমোজিও। এখন অবধি ওই পোস্টে প্রায় ৮৬ হাজার লাইক পড়েছে। রোনালদোর কমেন্টে লাইকের সংখ্যাটাও ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।

এরপরই মেসির বাবা পোস্ট করলেন এই ছবি। সেখানে তিনি ক্যাপশন দিয়েছেন, ‘ব্লা ব্লা ব্লা, চালিয়ে যাও!’ তাতেই ইউরোপীয় পরিমণ্ডলে সৃষ্টি হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। ধারণা করা হচ্ছে, মেসির বাবার এই ক্যাপশন মূলত রোনালদোকে লক্ষ্য করেই। আবার অনেকের মতে, বিষয়টা সামগ্রিক সমালোচনার জবাবই। 

মেসি অবশ্য এ বিষয়ে মুখই খোলেননি। ব্যালন ডি’অর বিজয়ের পর ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রামে তার পোস্ট এসেছে দুটো। প্রথমটা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে। পরেরটাও ধন্যবাদেরই। অ্যাডিডাস আইফেল টাওয়ারের সামনে ফুটবলে পা দেওয়া সাতটা সোনার ছাগল সাজিয়েছিল। তাদের ধন্যবাদ জানিয়েই এসেছে পরের পোস্টটা।

এনইউ/এটি