গেল গ্রীষ্মে যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, তা নিয়ে এখন আফসোস হচ্ছে রোনালদোর। না, জুভেন্তাস ছাড়া নিয়ে নয়; ‘চ্যালেঞ্জ’ জিততে পারেননি, খুব একটা সুখেও ছিলেন না সেখানে, আফসোসটা তা নিয়ে নয়। রোনালদোর আফসোসটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যাওয়া নিয়ে। তা থেকে মুক্তি দিতেই ‘শতাব্দির সেরা বিশ্বাসঘাতকতার’ বন্দোবস্ত করছেন তার এজেন্ট, জানাচ্ছে ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যম। 

রোনালদোর আজকের রোনালদো হওয়ার সোপান গড়ে দিয়েছিল যে ক্লাব, সেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড গেল গ্রীষ্মে তাকে সুযোগ দিয়েছিল ক্লাবে ফেরার, ফের একবার তারকা বনে যাওয়ার। রোনালদোও ক্লাবের প্রতি ভালোবাসা, স্মৃতিকাতরতায় গলে গিয়েছিলেন রীতিমতো।

রেড ডেভিলদের সেরাটা দিতে পারবেন না, তিনি নিজেও জানতেন সেটা। তবু তার কাছে আকর্ষণীয় প্রস্তাব ছিল আরও অনেক। কিন্তু ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অবসরের আশা পূরণের লোভটা সামলাতে পারেননি তিনি। তার সঙ্গে জেডন স্যানচো, রাফায়েল ভারানদের দলে টেনে রীতিমতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্যও ফেভারিটও ধরা হচ্ছিল তাদের।

তবে এই ভ্রম কাটতে সময় লাগেনি রোনালদো। শুরুটা ভালোই হয়েছিল, কিন্তু এরপর যতই ম্যাচ গড়িয়েছে, বিষয়টা ততই মনে খচখচ করতে শুরু করেছে রোনালদোর। এরপর দলের বাজে ফর্মের খেসারত দিয়ে চাকরি গেল কোচ ওলে গুনার সোলশায়ারের। এলেন র‍্যালফ র‍্যাংনিক, গেগেন প্রেসিংয়ের জনক থাকবেন জুন পর্যন্ত। তার আসার পর রোনালদোর মনের খচখচানিটা পরিণত হয়েছে জোর অস্বস্তিতে। ক্লাবও বর্তমানে আছে পয়েন্ট তালিকার ছয়ে, সব মিলিয়েই রোনালদোর ইচ্ছে করছে দল ছাড়ার।

ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যম এল নাসিওনাল জানাচ্ছে, ইতোমধ্যে কথাও হয়ে গেছে এজেন্ট জোর্জে মেন্দেজের সঙ্গে। পরিস্থিতি না বদলালে মৌসুম শেষেই দল ছাড়বেন রোনালদো। এই মুহূর্তে বড় কোনো শিরোপা জেতা কঠিনই মনে হচ্ছে দলটির। 

বয়স ৩৬ হলেও তাকে পেতে চাইবে যে কোনো দলই। একমাত্র রিয়াল মাদ্রিদই এখন পর্যন্ত তাকে ফেরানোর কথা উড়িয়ে দিয়েছে। মেন্দেজের ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ পরিকল্পনায় আছে পিএসজির মতো নামও। দলটি নাকি শেষ দলবদলে তাকে দলে ভেড়ানোর জন্য মেন্দেজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

তবে তার সঙ্গে আলোচনাটা অনেক দূর এগিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটির। গেল মৌসুমে কেবল একটা চুক্তি সই করাই বাকি ছিল দুই পক্ষের। শেষ মুহূর্তে ইউনাইটেডের কথায় রাজি হয়ে সিটির ডেরায় পা রাখা হয়নি রোনালদোর।

পেপ গার্দিওলা একজন গোলস্কোরার খুঁজছিলেন হন্যে হয়ে। তাকে কিংবা হ্যারি কেইনের কাউকেই পাওয়া হয়নি দলটির। ফলে জায়গাটা এখনো ফাঁকা পড়ে আছে সেখানে। এল নাসিওনাল জানাচ্ছে, ইউনাইটেডের সেই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী সিটিতেই এবার পাড়ি জমাতে চলেছেন পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী। আর সেটাই যদি সত্য হয়, তাহলে যে বিষয়টা শেষমেশ বিশ্বাসঘাতকতাই হবে, তা বলাই বাহুল্য!

এনইউ/এটি